দেড় বছরে পাহাড়-ডুয়ার্সে খুলেছে ২৯টি বন্ধ চা বাগান
একের পর এক বাগান খোলায় কার্যত জোয়ার এসেছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পে। প্রশাসন সূত্রের খবর বিধানসভা ভোটের আগে ও পরে মিলিয়ে মাত্র দেড়বছরে চালু হয়েছে ২৯টি বন্ধ বাগান। সেগুলি পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে অবস্থিত। এতে কর্মসংস্থান ফিরে পেয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক। শুধু তাই নয়, চা বাগানে আর্থিক লগ্নির পরিমাণও বেড়েছে। এ নিয়ে শ্রমিকরা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চা শিল্প রুগ্ন হয়ে পড়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে চা শিল্পে স্বর্ণযুগ ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছি। বাকি বন্ধ বাগানগুলিও শীঘ্রই খোলা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে রুগ্ন উত্তরবঙ্গের চা শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে ঝাঁপিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শ্রমদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে অনুমোদিত চা বাগানের সংখ্যা ২৮৫টি। যারমধ্যে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বাগানের সংখ্যা বেশি। একদা সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে বন্ধ বাগানের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০টি। দেড়বছরে ২৯টি চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে আলিপুরদুয়ার জেলায় বাগান খোলার সংখ্যা সর্বাধিক, ১২টি। যারমধ্যে বিধানসভা ভোটের আগে খুলেছে ন’টি। ভোটের পরে এখনও পর্যন্ত খুলেছে দু’টি বাগান। চলতি মাসের ২৭ তারিখ আরও একটি বাগান খুলতে যাচ্ছে।
সেই বাগানগুলির মধ্যে মাদারিহাট ব্লকের ডিমডিমা, বীরপাড়া, গ্যারগেন্দা, তুলসীপাড়া, হাণ্টাপাড়া, লঙ্কাপাড়া ও ধুমচিপাড়া এই সাতটি বাগান অন্যতম। ২০১৮ সালে সেগুলি বন্ধ হয়। বিধানসভা ভোটের আগে ২০২০ সালে সাতটি বন্ধ বাগানের মধ্যে রাজ্য সরকার উদ্যোগে লঙ্কাপাড়া ছাড়া ছ’টি বাগান খুলে দেওয়া হয়। কালচিনি ব্লকের কালচিনি, রায়মাটাং ও চিঞ্চুলা বাগানের কোনওটি একবছর ধরে, আবার কোনওটি দেড়বছর ধরে বন্ধ ছিল। রাজ্য সরকারের তৎপরতায় বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার ঠিক আগেই ওই তিনটি বন্ধ বাগান খুলে যায়। বাগানগুলিতে শ্রমিক সংখ্যা কোথাও ৭০০, কোথাও ৯০০, আবার কোথাও ৫০০। কয়েকটি বাগানে শ্রমিক সংখ্যা হাজারের উপরে। সব মিলিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ১২টি বন্ধ চা বাগান খুলে দেওয়ায় প্রায় ১৫ হাজারের মতো চা শ্রমিক উপকৃত হচ্ছেন।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত তরাই-ডুয়ার্স প্ল্যানটেশন ওয়াকার্স ইউনিয়নের সভাপতি নকুল সোনার বলেন, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের বিধায়ক, সংসদ সদস্য তেমন নেই। তা হলেও বাগান খোলার উদ্যোগে রাজ্য সরকারের কোনও খামতি নেই। এখন এই শিল্পে এখন জোয়ার এসেছে। সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক অবশ্য বলেন, বাগান খোলার উদ্যোগ ভালো। কিন্তু, যা হচ্ছে তা দেখানো ছাড়া আর কিছু নয়।