দেশ বিভাগে ফিরে যান

আলোচনা ছাড়াই লোকসভায় পাশ নির্বাচনী সংস্কার বিল, আজ পেশ রাজ্যসভায়

December 21, 2021 | 2 min read

প্রবল আপত্তি ছিল বিরোধীদের। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই সোমবার লোকসভায় ‘নির্বাচনী আইন (সংশোধনী) বিল ২০২১’ পেশ করেই সঙ্গে সঙ্গে তা পাশ করাল মোদী সরকার। বিরোধীদের দাবি মেনে বিল পাঠানো হল না স্ট্যান্ডিং কমিটিতে। গ্রাহ্য হল না ভোটাভুটির দাবিও। আলোচনা ছাড়াই স্রেফ ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল বিল। প্রতিবাদে বিলের কপি ছিঁড়ে উড়িয়ে দিলেন বিরোধীরা।

আজ রাজ্যসভাতেও সরকারের পক্ষ থেকে একই চেষ্টা হবে বলে জানা গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ২৩ তারিখ নয়, তার আগেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ করতে পারে সরকার। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড সহ আগামী বছর পাঁচ রাজ্যে ভোটের আ঩গেই বিলটি আই঩নে পরিণত করা সরকারের টার্গেট বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। বিরোধীদের দাবি, বিল আইনে পরিণত করে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করার সুযোগ হাতে তুলে নিল মোদী সরকার। অভিযোগ উঠল কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করতেই বুলডোজ করে বিল পাশ হচ্ছে। তাছাড়া আধার কার্ড স্রেফ বাসস্থানের পরিচয়পত্র এবং সরকারি সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাহলে ভোটার কার্ডের সঙ্গে এটি কেন যুক্ত করা হচ্ছে? তবে কি ভোট না দিলে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার গোপন পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের? প্রশ্ন তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। জবাবে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, ‘আধার সংযোগের বিষয়টি ঐচ্ছিক। বাধ্যতামূলক নয়। কোনও ভোটার যাতে একাধিক জায়গায় ভোট দিতে না পারেন, জাল ভোটিং না হয়, সেটাই এর প্রধান লক্ষ্য। নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতা বা তথ্যের উপর কোনও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আগেই আলোচনা হয়েছে। তাদেরও প্রস্তাব ছিল আধার সংযোগ করার।’ যদিও মন্ত্রীর কথা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাই বিলটি পেশ হওয়ার সময় তো বটেই, পাশের সময়ও প্রবল বিরোধিতায় সোচ্চার হন তৃণমূলের দুই এমপি সৌগত রায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌগতবাবু বলেন, আধার সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়কেই মানছে না কেন্দ্র। অন্যায়ভাবে বিল আনা হচ্ছে। তোপ দেগে কল্যাণবাবু বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করছে মোদী সরকার। গাজোয়ারি চলছে। তাছাড়া বাসস্থানের প্রমাণপত্র কি কখনও নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে? প্রশ্ন তোলেন তিনি।

স্রেফ কংগ্রেস বা তৃণমূলই নয়। শিবসেনা, এনসিপির মতো মোদী বিরোধী দলের পাশাপাশি বিজেপির ‘বন্ধুদল’ বলে পরিচিত বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, মায়াবতীর দল বিএসপি’র এমপিরাও বিরোধিতায় সরব হন। বিজেপি এমপি নিশিকান্ত দুবে তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। বলেন, ওরা বাংলাদেশিকে ভোটার করতে চায় বলেই বিরোধিতা করছে। কংগ্রেসও নেপালের এক নাগরিককে এমপি করেছিল। যার প্রতিবাদ করে বিজেপিকেই পাল্টা প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন শারদ পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া শুলে। তাঁর তোপ, বিজেপি বাংলাদেশির প্রসঙ্গ তুলছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত কেন্দ্রের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই যে বাংলাদেশি নাগরিক বলে অভিযোগ রয়েছে, তা কি ভুলে গেছেন?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lok Sabha, #Rajya Sabha

আরো দেখুন