দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

হলদিয়ার ইন্ডিয়ান অয়েল কারখানায় দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত ৩, শোকপ্রকাশ মমতার

December 21, 2021 | 2 min read

হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর মৃত্যু আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহতদের হলদিয়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের গ্রিন করিডর করে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, আজ মকড্রিল চলছিল আইওসিএলের রিফাইনারিতে। সেই সময় রিফাইনারিতে হাইড্রোজেন সালফাইড ট্যাঙ্কার থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে এলাকায় পৌঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, হলদিয়ার আগুন বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। দমকলে দুটি ইঞ্জিন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল, তবে তার আগেই ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর আহতদের কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। ঠিক কতজন গুরুতর আহত তা এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে খবর, হলদিয়া থেকে ৩০ টি অ্যাম্বুলেন্স কলকাতায় আসছে। কলকাতা পুলিশের কাছে গ্রিন করিডরের ব্যবস্থা করে রাখার জন্য বলা হয়েছে।

যাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থা, তাঁদের শরীরের কত শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ভরতি করানো হচ্ছে। যাঁদের শরীরের ৭০-৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের রুবি মোড় সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত যাঁদের শরীর পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের মেডিকা, রুবি এবং সিএএমআরআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইন্ডিয়াল অয়েল কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।

ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষের জন সংযোগ আধিকারিক অরূপ দাস জানিয়েছেন, “এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আজ দুপুর ২.৫০ নাগাদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। সেই সময়েই একটি ফ্ল্যাশ ফায়ার হয়, এবং তার থেকেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফেও আমাদের সাহায্য় করা হয়েছে। কী কারণে এই আগুন লাগল, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। আমাদের প্রাথমিক কাজ কীভাবে মানুষদের বাঁচানো যায়য।”

ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সিটু শ্রমিক সংগঠনের নেতা অচিন্ত্য শাসমল জানিয়েছেন, “রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য আইওসি প্রতি বছর শাট ডাউন করে। অর্থাৎ, স্থায়ী শ্রমিকরা সেখানে কাজ করেন না। বাইরের কোনও সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। সেই সংস্থা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক এনে কাজ করে। হঠাৎ এই রকম বড় মাপের দুর্ঘটনা এর আগে হলদিয়া রিফাইনারিতে আগে কখনও ঘটেনি। এখনও পর্যন্ত যা খবর প্রায় ৪৪ জন আহত। তিন জন মারা গিয়েছেন। আমি হাসপাতালেই রয়েছি। রিফাইনারিতে এমএসকিউ নামে একটি বিভাগ রয়েছে, যেখানে পেট্রল থেকে সালফার তৈরি হয়। সেই বিভাগেই এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা পরবর্তী সময়ে জানা যাবে। কিন্তু যেটা মূল বিষয়, এত বড় একটি শিল্প এলাকা, এখানে অগ্নিদগ্ধ হওয়ায়, হলদিয়াতে চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকার কারণে কলকাতায় নিয়ে যেতে হচ্ছে। যাঁরা আহত হচ্ছেন, তাঁরা দেরিতে চিকিৎসা পাচ্ছেন। এটিই আমাদের কাছে দুর্ভাগ্যজনক।”

দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানায় শোকার্ত পরিবারের পাশে থাকবে রাজ্য সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Haldia

আরো দেখুন