পেনশন বৃদ্ধির দাবিকে ঠান্ডা ঘরে পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার?
কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) ন্যূনতম মাসিক পেনশন বৃদ্ধির দাবিকে কি আপাতত ঠান্ডা ঘরেই পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার? সোমবার সংসদে এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নে মন্ত্রীর জবাবে বৃদ্ধি পেয়েছে জল্পনা। এদিন লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে শ্রমমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানিয়েছেন, ক্ষমতায় আসার পর একমাত্র কেন্দ্রের এই মোদী সরকারই মাসে ন্যূনতম এক হাজার টাকা করে পেনশন দিচ্ছে ইপিএফ গ্রাহকদের। এই সরকারই প্রথম এহেন বন্দোবস্ত করেছে। সেটিও দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এর ফলে কি কেন্দ্রীয় সরকার বোঝাতে চাইছে, আরও বাজেট বাড়িয়ে ইপিএফের ন্যূনতম মাসিক পেনশন এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা আপাতত নেই? যদিও এ ব্যাপারে এদিন লোকসভার লিখিত জবাবে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু উল্লেখ করেননি শ্রমমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে ১৯৯৫ সালের এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিমে (ইপিএস) প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্যই যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছে, তা সোমবার সংসদে লিখিতভাবে মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই সংশোধন এবং পর্যালোচনার আওতায় আদৌ ইপিএফের ন্যূনতম মাসিক পেনশন বৃদ্ধির বিষয়টি রয়েছে কি না, তার কোনও উল্লেখ করেনি শ্রমমন্ত্রক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের কমিটির রিপোর্ট নিয়েও কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে বাড়ছে জল্পনা। একইসঙ্গে প্রবল শঙ্কায় রয়েছেন দেশের প্রায় ৭১ লক্ষ ইপিএফ পেনশন গ্রাহক।
সোমবার লোকসভায় শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছে, ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সংসদে একটি রিপোর্ট পেশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ১৯৯৫ সালের ইপিএস স্কিম নিয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। আর সেই বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনেই ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথমবারের জন্য ইপিএফ পেনশন গ্রাহকদের মাসে ন্যূনতম এক হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া শুরু করা হয়। এর পাশাপাশি ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকেই ইপিএফওর আওতায় আসার জন্য মাসিক বেতনের সর্বোচ্চ পরিমাণ সাড়ে ছ’হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করা হয়।
অর্থাৎ, ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরের আগে ন্যূনতম ২০ জন কর্মী আছেন, এমন সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের যে কর্মচারী মাসে সর্বোচ্চ সাড়ে ছ’হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতেন, তিনি বাধ্যতামূলকভাবে সামাজিক সুরক্ষা পরিষেবা ইপিএফের আওতায় থাকতেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি করে মাসে ১৫ হাজার টাকা করা হয়। এরপরেই ইপিএস, ১৯৯৫-এর সংশোধন এবং পর্যালোচনার জন্য এমপাওয়ার্ড মনিটরিং কমিটি (এইচইএমসি) তৈরির প্রসঙ্গ টেনে শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছে, ইপিএস পেনশন প্রাপকদের দাবিদাওয়াকে মাথায় রেখেই এটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তাতে ন্যূনতম মাসিক পেনশন বৃদ্ধির বিষয়টি রয়েছে কি না, তার উল্লেখ করা হয়নি।