ধান কেনার কাজে গতি বাড়াতে আরও স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র খুলবে রাজ্য
চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজে গতি বাড়াতে আরও স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র (সিপিসি) খুলতে চাইছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি)। সোমবার নিগমের বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মোট ৭১টি সিপিসি চালু করা হবে। ইতিমধ্যে ৩৬টি চালু হয়ে গিয়েছে। ইসিএসসি-র চেয়ারম্যান তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে ইচ্ছুক চাষির সংখ্যা বাড়লে দেড়শো সিপিসি চালানো হবে। খাদ্যদপ্তর যেসব সিপিসি চালাচ্ছে সেখানেই ইসিএসসি অতিরিক্ত কাউন্টার খুলছে। এতে চাষিদের ভিড় সামলাতে সুবিধা হবে। চাষিদের অপেক্ষার সময় ও হয়রানি কমবে। সিপিসিতে ধান বিক্রি করার আরও সুবিধা হল, এখানে প্রতি কুইন্টালে নির্ধারিত ১৯৪০ টাকার সঙ্গে ২০ টাকা অতিরিক্ত বোনাস পান চাষিরা। ইসিএসসি এখনও পর্যন্ত ৭০ হাজার টন ধান কিনেছে। সংস্থার কেনার লক্ষ্যামাত্রা ১২ লক্ষ টন হলেও তার থেকে বেশি কিনতে চাইছে।
এবারই প্রথম ইসিএসসি নিজে সিপিসি চালু করে ধান কিনছে। এতদিন শুধু খাদ্যদপ্তর সিপিসি চালাত। ইসিএসসি-সহ কয়েকটি সরকারি সংস্থা মূলত গ্রামের কৃষি সমবায় সংস্থাগুলির মাধ্যমে অস্থায়ী শিবির খুলে ধান কিনত। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমেও গ্রামে গিয়ে ধান কেনা হতো। এবারও অস্থায়ী শিবির ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ধান কেনা হচ্ছে। কোন এলাকায় অস্থায়ী শিবির খোলা হবে তা জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় বিডিওরা ঠিক করবেন। অস্থায়ী শিবিরগুলি কয়েকদিন চালানো হয়। সিপিসির সুবিধা হল, এখানে সপ্তাহের ছ’দিন কাজ চলে। প্রয়োজনে রবিবারও সিপিসি চালু রাখা হতে পারে বলে জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানিয়েছেন। ফড়েদের দূরে সরিয়ে প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার ব্যাপারে এবার বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সংস্থার আধিকারিকরা ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। ফড়েদের মাধ্যমে ধান বিক্রির চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি রাইস মিলগুলির কাছ থেকে বকেয়া চাল আদায়ের সক্রিয় হয়েছে সংস্থা। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমানের মোট তিনটি রাইস মিল গত খরিফ মরশুমের বকেয়া প্রায় ১ হাজার টন চাল দেয়নি। সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমানের এক রাইস মিল মালিককে ইতিমধ্যেই পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। এই মিলের কাছে বকেয়া রয়েছে ৮৫৩ টন চাল। বকেয়া চাল দিন দুয়েকের মধ্যে না দিলে অন্য দু’টি রাইস মিলের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।