প্রতারণা করে ‘উধাও’ বিজেপি নেতা, খুঁজে দিলে পুরস্কার!
এলাকার বাসিন্দা ও দলের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত গাংনাপুরের বিজেপি নেতা অমিতোষ বসুকে খুঁজে দিলে নগদ ৫০হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এমনই ঘোষণা করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন প্রতারিতরা। ইতিমধ্যেই ওই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। প্রতারিতদের দাবি, থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতারক বিজেপি নেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতাদের বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও ওই নেতার কোনও খোঁজ নেই। সেকারণে বাধ্য হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযুক্ত নেতার ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। এমনকী ওই নেতার খোঁজ পেলে জানানোর জন্য বেশ কয়েকটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন পোস্ট সামনে আসায় বিপাকে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘অমিতোষ সাধারণ মানুষের প্রায় ৫০কোটি টাকা নিয়ে পরিবার সহ বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যায়। এই লোক খুব বড়মাপের ফ্রড। রানাঘাট-২ নম্বর ব্লকের ঘোলা গ্রামের একাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রচুর টাকা লুট করে পালিয়েছে। কেউ যদি ওকে দেখতে পান তাহলে এই নম্বরে ফোন করুন। ৫০ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার রইল। স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ সরকার বলেন, গোটা গ্রামকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। যে কারণে ওর খোঁজ পেতে ফেসবুকে ওই পোস্ট করেছি। সাধারণ মানুষের চোখে পড়লে আমরা খবর পেতে পারি। তারজন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তার চেয়েও বেশি টাকা দিতে আমরা রাজি। আমরা চাই, গ্রামের মানুষ টাকা ফেরত পাক। অমিতোষের উপযুক্ত শাস্তি হোক।যদিও এব্যাপারে বিজেপির নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি স্বপন দাম বলেন, আমাদের দল কখনোই কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। অভিযুক্ত ধরা পড়ুক, সাধারণ মানুষ টাকা ফেরত পাক তা আমরাও চাই। এজন্য প্রয়োজনে আমরা পুলিসকে সবরকম সাহায্য করতে রাজি।দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাংনাপুরের ঘোলা গ্রামে অভিযুক্ত অমিতোষ বিজেপির তফসিলি মোর্চার জেলা সভাপতি ছিলেন। বছর কয়েক আগে তিনি ‘যুব স্বনির্ভর’ নামে একটি সমিতি চালু করেন। অল্প সময়ে দ্বিগুণ টাকা ফেরতের টোপ দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। কয়েকজনকে সময়মতো টাকাও ফেরত দেন। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীরাও তাঁর কাছে টাকা রেখেছিলেন। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি আচমকা ওই বিজেপি নেতা উধাও হয়ে যান। গাংনাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্ত অমিতোষ সুকৌশলে এলাকা ছেড়ে উধাও হওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। প্রথমে সে বাবা-মাকে অন্যত্র রেখে আসে। এরপর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের একে একে গাংনাপুরের বাড়ি থেকে অন্যত্র নিয়ে যায়। বাংলাদেশও তাঁর আত্মীয়-পরিজন রয়েছেন। যে কারণে দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, অমিতোষ নিজেকে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিত। অল্পদিনের মধ্যে সে বড় বাড়িও তৈরি করে। বিজেপি রাজ্যস্তরের নেতাদের সঙ্গেও তাঁর ওঠাবসা আছে বলে আমাদের জানিয়েছিল। সেকারণে সহজেই ওকে বিশ্বাস করেছি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, আমাদের ভুল হয়েছে।