আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

ইউনিসেফের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলার সুপ্রতিম, দ্বিতীয় সৌরভ

December 23, 2021 | 2 min read

ইউনিসেফ আয়োজিত ‘ফটো অব দ্যা ইয়ার ২০২১’ প্রতিযোগিতায় বাঙালি তথা ভারতীয় ফটোগ্রাফারদের জয়জয়কার। শিশুদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম, জীবনযাপনকে উপজীব্য করে বিশ্বজুড়ে এই চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেই প্রতিযোগিতায় ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত সুন্দরবনের শিশুদের জীবনযুদ্ধ ক্যামেরাবন্দি করে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন সুপ্রতিম ভট্টাচার্য। অন্যদিকে করোনাকালে দরিদ্র শিশুদের শিক্ষার এক নতুন দিশা দেখিয়েছে জামুড়িয়া। গ্রামের মাটির দেওয়ালই হয়ে উঠেছে ব্ল্যাক বোর্ড। মাটির দাওয়ায় বসে মা‌ইক্রোস্কোপ হাতে জীবাণু চিনেছে শিশুরা। সেই ছবি তুলে প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন কোলাঘাটের সৌরভ দাস। প্রতিযোগিতার তৃতীয় ইরাকের ‌ইউনিস মহম্মদ।

বার বার প্রকৃতির রোষে পড়ছে সুন্দরবন। একের পর এক সাইক্লোন দরিদ্র পরিবারের মাটির ঘরগুলিকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায়। প্রকৃতির প্রতি মানুষের বিরূপ আচরণের প্রভাবেই প্রকৃতিও মানব সমাজের প্রতি বিরূপ হচ্ছে বলে মত পরিবেশবিদদের। পরিবেশ আন্দোলন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সুপ্রতিমবাবু ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন সুন্দরবনের নামখানার দরিদ্র শিশুদের জীবন সংগ্রামকে। দু’দশক ধরে তিনি সুন্দরবনের উন্নয়নে কাজ করছেন। তাঁর ছবিতে দেখা গিয়েছে, কোনও শিশু বাড়ির সামগ্রী বাঁচাতে বড়দের সঙ্গে হাত লাগিয়েছে। কেউ আবার ক্ষুধা মেটাতে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে। কারও আবার সব হারিয়ে অসহায় চাহনি। স্বপ্নভঙ্গের করুণ কাহিনিই মূর্ত হয়েছে তাঁর ছবিগুলিতে। সেই ছ঩বিই ইউনিসেফের বিচারকদের নজরে সেরা ছবি। বারুইপুরের বাসিন্দা সুপ্রতিমবাবুর জন্ম ১৯৮৩ সালে। এর আগেও একাধিক বড় পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। তাঁর ছবিগুলির শিরোনাম ছিল ‘ডুবন্ত স্বপ্ন’। এই পুরস্কার পেয়ে ইউনিসেফকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুপ্রতিমবাবু। সেই ভিডিও ইউনিসেফ নিজেদে র ওয়েবসাইটে প্রকাশও করেছে।

ছবি: সৌরভ দাস
ছবি: সৌরভ দাস (Sourav Das)

একদিকে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা, অন্যদিকে মহামারী জয়ের গল্প। করোনা মহামারী দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের দরজায় তালা লাগিয়ে রেখেছে। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ স্কুলের পথে পা বাড়ানো প্রথম প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। ইউনিসেফের আশঙ্কা, এতে বাড়বে স্কুলছুট ও বাল্যবিবাহের সংখ্যা। কিন্তু সেই আশঙ্কাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করেছে জামুড়িয়ার আটপাড়া। স্থানীয় তিলকা মাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক করোনাকালে বাড়িতে বসে না থেকে তাঁর কর্মক্ষেত্রের আদিবাসী পাড়াগুলিতে হাজির হন করোনার হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতে। গ্রামের পথই হয়ে ওঠে শিক্ষণ কেন্দ্র। কীভাবে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে, কেন মাস্ক পরতে হবে, কীভাবে হাত ধুতে হবে সবই তিনি বোঝান ছড়া বলে। এরপর গ্রামের কাঁচা দেওয়ালে কালো রং করে সেগুলিকেই ব্ল্যাকবোর্ডের মতো ব্যবহার করতে শুরু করেন। সেখানে মাইক্রোস্কোপও হাজির করেন। এভাবেই বিশ্বজুড়ে যেখানে স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, তখন রাস্তার মাস্টার দীপনারায়ণ নায়েক জামুড়িয়ায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন। সেইসব দৃশ্যই নানাভাবে ক্যামেরাবন্দি করে প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন সৌরভ দাস। তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। তাঁর ছবির শিরোনাম ছিল, ‘এ স্মল ইয়েট গ্রেট ভিকট্রি ওভার দ্যা প্যানডেমিক’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#unicef, #Sourav Das, #Supratim Bhattacharjee

আরো দেখুন