অন্তর্ঘাত ও সাংগঠনিক দুর্বলতাই পুরভোটে হারের কারণ, ক্ষোভ বহু বিজেপি প্রার্থীর
কলকাতা পুরভোটের ফল বিশ্লেষণে রাজ্য বিজেপির বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, হেস্টিংস অফিসের বৈঠকে সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলে অমিত মালব্যর কাছে ক্ষোভ উগরে দেন বেশ কয়েকজন পরাজিত প্রার্থী। সূত্রের খবর, বরো পিছু ২০-২৫ মিনিটের বৈঠকে বারবার উঠে এসেছে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা। দলের একাংশ প্রার্থীদের হয়ে প্রচারের পরিবর্তে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলেছে বলে পরাজিত বিজেপি প্রার্থীদের দাবি। সূত্রের খবর, দলের সাংগঠনিক স্তরে রদবদলের পর নতুন উদ্যমে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি, কেন্দ্রের প্রকল্প নিয়ে জন সচেতনতা বাড়ানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, পুরভোটে সাবোটাজ হয়েছে কি না জানতে, আজ বিশ্লেষণ বিজেপির বৈঠকে। আগামীদিনে এ ধরনের কাজ রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাও ঠিক হবে।
এরইমধ্যে সূত্র মারফৎ জানা গেছে, আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কলকাতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। এর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে,আসন্ন পুরভোটে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তাকে হাতিয়ার করেই কি ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি? বিধানসভা ও পুরভোটে হারের পর ঘুরে দাঁড়াতে বিজেপির ভরসা কি সেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ?
২০০ আসনের টার্গেট নিয়ে বিধানসভা ভোটে ৭৭-এই থেমে যাওয়া, ভবানীপুর-সহ সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একটিতেও না জিততে পারা, আর সদ্য শেষ হওয়া কলকাতা পুরভোটেও মাত্র ৩টি ওয়ার্ডে জয়ী হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। আর তাই কি ফের নরেন্দ্র মোদির মুখকে সামনে রেখেই বাকি পুর নির্বাচনগুলিতে লড়তে চাইছে বিজেপি? সূত্রের খবর, ২৩ জানুয়ারি, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীকে কলকাতায় আনার পরিকল্পনা আছে রাজ্য বিজেপির।এ নিয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ২২ জানুয়ারি হাওড়া, বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি–এই ৫টি পুরসভার ভোট হবে। আর বাকি ১০৯টি পুরসভার ভোট হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি।
সূত্রের খবর, সেই ভোটগুলিতে রণকৌশল হিসেবে শতাধিক পুরসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তাকে সামনে রেখেই প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে দল। ইতিমধ্যেই বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছে গেছে প্রধানমন্ত্রীর কাটআউট।দ্রুত এই কাটআউটগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে জেলায় জেলায়।যদিও এ নিয়ে কটাক্ষের সুর তৃণমূলের গলায়। আবার তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁতের অভিযোগ বাম-কংগ্রেসের।
অন্যদিকে পুরভোটের আগে ফের সাংগঠনিক স্তরে ব্যাপক রদবদল করেছে বিজেপি।একসঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৩০টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকে।সংগঠনকে মজবুত করতে ৩৯ থেকে বাড়িয়ে, সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা করা হয়েছে ৪২।মালদা দক্ষিণ, জয়নগর এবং বোলপুরকে নতুন সাংগঠনিক জেলা করা হয়েছে। উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে কল্যাণ চৌবেকে। দক্ষিণ কলকাতা জেলার নতুন সভাপতি হয়েছেন সঙ্গীতা চৌধুরী। একইসঙ্গে শীলভদ্র দত্তকে উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলা এবং দক্ষিণে ইনচার্জ করা হয়েছে সৌরভ শিকদারকে।