দেশ বিভাগে ফিরে যান

ওমিক্রন আর মূল্যবৃদ্ধির সাড়াঁশি আক্রমণে টালমাটাল শেয়ার বাজার

December 27, 2021 | 2 min read

গত ১৭ এবং ২০ ডিসেম্বর পরপর দু’টি লেনদেনের দিনে ওমিক্রনের ধাক্কায় মোট ২০৭৯ পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স। এর পরেই গা ঝাড়া দিয়ে নতুন করে ছন্দে ফেরার চেষ্টা শুরু করে ভারতীয় শেয়ার বাজার। পরের তিন দিন (মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি) মিলিয়ে সেনসেক্স ফের ১৪৯৪ পয়েন্ট ওঠে। বিদেশি লগ্নিকারীরা বড়দিনের ছুটিতে যাওয়ার আগে শেয়ার বিক্রি অব্যাহত রাখায় শুক্রবার অবশ্য ফের তা নামে ১৯১ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে সপ্তাহ শেষে সেনসেক্স ৫৭ হাজার এবং নিফ্‌টি ১৭ হাজারের উপরে দৌড় শেষ করেছে। সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে বাজার প্রায় ৮% নীচে। আবার ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনসেক্স থেমেছিল ৪৮,৭৫১ পয়েন্টে। সেই তুলনায় বাজার সূচকটি ৯০০০ পয়েন্টের বেশি উপরে। বছরের শেষ দিন আগামী শুক্রবারে দেশের দুই প্রধান শেয়ার সূচক কোথায় গিয়ে থামে তা-ই এখন দেখার। মোটের উপর গত কয়েক দিনের গতিবিধি থেকে পরিষ্কার, বাজার এখন যথেষ্ট অস্থিরতার মধ্যে।

তবে ওমিক্রনের থেকেও এখন বাজারের বেশি মাথাব্যথা বিশ্বব্যাপী মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। নভেম্বরে ভারতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশের কাছাকাছি। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ছাড়ায় ১৪%। তিন দশকের সর্বোচ্চ। যা এখন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বড় উদ্বেগের কারণ। পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমানোর প্রভাব অনেকটাই মিইয়ে গিয়েছে ডলারের দাম এবং মোবাইলের মাসুল বৃদ্ধির কারণে। কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধির জন্য দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে বেশিরভাগ গাড়ি সংস্থা। বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্যের দাম সম্প্রতি ৩%-৫% বেড়েছে। নতুন বছরে তা আরও ৫%-১০% বৃদ্ধির আশঙ্কা। বেড়েছে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামও। রেল, বিমান, জাহাজ এবং সড়কপথের পরিবহণ খরচও ঊর্ধ্বমুখী। সব ক্ষেত্রে একই ভাবে দাম বাড়তে থাকলে চাহিদায় তার বিরূপ প্রভাব পড়বে।

মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে রাখতে পেট্রল ও ডিজ়েলের দাম আরও ৫ টাকা করে কমানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে। বাজারকে চিন্তায় রেখেছে ঊর্ধ্বমুখী বন্ড ইল্ডও। গত সপ্তাহে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড পৌঁছেছে ৬.৪৬ শতাংশে। এতে বাজার থেকে ঋণ নিতে কেন্দ্রের খরচ বাড়বে। অন্য দিকে, ইল্ড বাড়লে বাজারে বন্ডের দাম কমবে। নামবে ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডের নেট অ্যাসেট ভ্যালু। ফলে শুধু একুইটি ফান্ডের লগ্নিকারীরাই নন, চিন্তায় আছেন ডেট ফান্ডে টাকা ঢালা মানুষেরাও।


সব মিলিয়ে অস্থির বাজারের এখন নজর থাকবে কোভিড সংক্রমণ ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসে কি না, আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশে কতটা সুদ বাড়ানো হয় ইত্যাদির দিকে। সূচক মাঝেমধ্যে বেশ খানিকটা করে নামায় মার খেয়েছে কয়েকটি নতুন ইসু। এই অবস্থায় বাজেট বাজারকে কতটা শক্তি দিতে পারে তার দিকে এখন সবাই তাকিয়ে। এলআইসির প্রস্তাবিত প্রথম শেয়ারের (আইপিও) সাফল্যও অনেকটা নির্ভর করবে অর্থবর্ষের শেষ দিকে বাজার কেমন থাকে তার উপরে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India, #price hike, #Omicron, #Share Market

আরো দেখুন