রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কলকাতার মতোই জেলায় জেলায় গেরুয়া রঙ ফিকে করার লক্ষ্য তৃণমূলের

December 27, 2021 | 2 min read

সদ্য সমাপ্ত কলকাতা পুরভোটে বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। নজর এখন রাজ্যের বাকি পুরসভার দিকে। যে শান্তিপূর্ণভাবে কলকাতার ভোট মিটেছে, একইরকভাবে রাজ্যজুড়েও সেই ছবিটা তুলে ধরতে চায় রাজ্যের শাসক দল। নেতৃত্বের স্পষ্ট বক্তব্য, ভোট হবে শান্তিপূর্ণভাবে। আর কলকাতা পুরভোটে প্রমাণ মিলেছে বিজেপি থেকে শহরবাসী মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আগামী পুরভোটেও পদ্ম হাতে নেবেন না রাজ্যের মানুষ।

১৯ ডিসেম্বর ভোট মিটেছে কলকাতায়। ২১ তারিখ ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ১৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছেন জোড়াফুলের প্রার্থীরা। বিজেপি পেয়েছে মাত্রা তিনটি আসন। আর নির্দল প্রার্থীদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যাও তিন। ফলে এই ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে, শহরে গেরুয়া রং উধাও। তেমনই কি রাজ্যের সর্বত্র হতে চলেছে?জল্পনা তুঙ্গে!

আগামী ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়ি, বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল পুরসভা ভোটের সম্ভাবনা। হাওড়া নিয়ে জটিলতা কাটলে সেখানেও ভোট হবে। তারপর ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে রাজ্যের বাকি পুরসভায়। ভোটের রণকৌশল নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে নেমে পড়েছেন নেতারা। এখানে তৃণমূলকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা আইপ্যাক। ওয়ার্ড ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরির কাজে নেমে পড়েছেন আইপ্যাকের সদস্যরা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন। বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের পারফরম্যান্স রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। ওয়ার্ডে জনপ্রিয় কোনও মুখ থাকলে, তাঁর সম্পর্কেও খোঁজখবর নিচ্ছেন আইপ্যাকের কর্মীরা। যে লড়াই করে জিততে পারবে, তাঁকেই টিকিট দেওয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে খবর। তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় দাবি করেছেন, ভোট হবে শান্তিপূর্ণভাবে। আমাদের বিশ্বাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের উপরই মানুষ আস্থা রাখবেন। আর পদ্মের পাপড়ি ঝড়বে। কলকাতার মতোই জেলায় জেলায় বিজেপির ফল আরও খারাপ হবে। প্রায় একই সুরে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, নির্দল আর বিজেপি কলকাতায় সমান সমান হয়েছে। আগামী দিন নির্দলের প্রাপ্ত ভোটের থেকেও নীচে নামবে বিজেপি। পদ্মের পতন যেভাবে শুরু হয়েছে, তাতে ভোট কমতে কমতে শূন্যে পরিণত হবে।

কলকাতা পুরভোটের আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, কেউ ভোটে গণ্ডগোল করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সূত্রেই কর্মীদের উদ্দেশ্যে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেছেন, মানুষের ভোটে জিততে পারলে কাউন্সিলর হবেন। কোনও অসৎ উপায় অবলম্বন করা যাবে না। তাঁর আরও সংযোজন, গতবার যেভাবে ভোট হয়েছিল, সেরকম ভেবে থাকলে, মুর্খের স্বর্গের বাস করছেন। কলকাতা পুলিস যেমন মেরে হাসপাতাল পাঠিয়ে দিয়েছে, তেমনই বারাকপুর পুলিস কমিশনারেট এমন মার মারবে যেমন মনে হবে নরেন্দ্র মোদী পুলিস পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা রাজ্যেরই পুলিস।

গণ্ডগোল যেমন বরদাস্ত করা হবে না, তেমনই দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ নির্দল হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ফরমান জারি করেছে তৃণমূল। আগামী পুরভোট নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে তৃণমূল নেতৃত্ব সব জেলায় বার্তা পাঠিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখেই প্রচার শুরু করার। আর এলাকাগতভাবে যে কাজ ভালো হয়েছে, সেটা বিশেষভাবে তুলে ধরতে। সেইসঙ্গে তৃণমূল এটাও বলেছে, যে এলাকায় বিরোধী ভোট রয়েছে, সেখানে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের প্রচার বেশি করে করতে। আর কোনও লবি বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, কোনও কর্মী বাড়িতে বসে থাকলে তাঁকে সক্রিয় করতে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #bjp, #tmc, #bengal politics

আরো দেখুন