গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি, আসরে নামছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
গোষ্ঠীকোন্দল এবং দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সম্পূর্ণ জর্জরিত হয়ে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ চাইছেন বাংলার নেতারা। তাঁদের আবেদন, পরিস্থিতি আর একা সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই যা করার করুক। দলীয় সূত্রের খবর, বঙ্গ নেতৃত্বের এহেন আবেদনে সাড়া দিয়ে শীঘ্রই কলকাতায় যাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা। ইতিমধ্যেই স্থির হয়েছে যে, আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুতেই রাজ্যে যাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তিনি বাংলায় তিনদিনের সফর করবেন। দলের নতুন রাজ্য কমিটির সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন। এই মুহূর্তে কলকাতাতেই আছেন বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য। বঙ্গ নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি বৈঠকও করছেন। নাড্ডার বঙ্গ সফরের আগে আজ, সোমবার নবগঠিত রাজ্যকমিটি ও জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ।
রবিবার দলের অন্যতম কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আর আলাদা করে দলকে বার্তা দেওয়ার কিছু নেই। তাঁরা রাজ্যে আসছেন। নাড্ডাজি তো আসছেনই। কলকাতায় আসার কথা বি এল সন্তোষজিরও। প্রত্যেকেই রাজ্য পার্টির সঙ্গে বৈঠক করবেন।’ এই গোটা ঘটনাক্রমকেই রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ মাত্রই দিনকয়েক আগে জে পি নাড্ডা এবং বি এল সন্তোষের সঙ্গে দিল্লিতে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের। বিশেষ করে কলকাতা পুরভোটে বিজেপির ভরাডুবির কারণে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে রাজ্য পার্টিকে কড়া ধমকও খেতে হয়েছে। এমনকী দিল্লির বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিজেপির বাংলার নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেছে, যা করার তা বঙ্গ বিজেপিকে একাই করতে হবে। একক শক্তিতেই লড়াই করতে হবে। কিন্তু তারপরেই বাংলার সংগঠন দেখতে ছুটতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এই ঘটনা রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের বঙ্গ ব্রিগেডের সাংগঠনিক দৈন্যদশাই ফুটিয়ে তুলছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি গঠনের পর এমনিতেই বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ বাড়ছে। জেলা সংগঠনে রদবদল সেই অসন্তোষ আরও তীব্র করেছে। একক শক্তিতে যা সামলানো বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতায় কুলোচ্ছে না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যতই বলুন, ‘বিজেপি একটা পরিবার। সব ক্ষোভ নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেব’—পরিস্থিতি কিন্তু অত সহজ নয়। তাই বাধ্য হয়েই হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।