খড়্গপুর আইআইটির নতুন বছরের ক্যালেন্ডারে বিতর্কিত দাবি, চাপানউতোর
ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে খড়্গপুর আইআইটি। আর্যরা ভারতে বহিরাগত নয়, নিজেদের ক্যালেন্ডারে এই দাবিতেই সিলমোহর দেওয়ার চেষ্টা করল তারা। ‘রিকভারি অব দ্য ফাউন্ডেশনস অব ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমস’ শীর্ষক নতুন বছরের এই শিক্ষামূলক ক্যালেন্ডারে ভারতে আর্য আক্রমণ বা অনুপ্রবেশকে তারা মিথ বলে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। এর জন্য বিভিন্ন দাবি করা হয়েছে। তাদের প্রথম যুক্তি, বুদ্ধদেব বা মহাবীরের জন্মের আগের শিলালিপি উদ্ধার হয়েছে। তাই ধরে নেওয়া যায়, কোনওকিছু লিপিবদ্ধ করার অবস্থায় পৌঁছনোর জন্য কয়েক হাজার বছর আর্য সভ্যতাকে অতিক্রম করতে হয়েছে। সেই কারণে, আর্য সভ্যতার সূচনাকাল নিয়ে এখন যে দাবি করা হয়, তা তার চেয়ে অনেক পুরনো। ঔপনিবেশিক ইতিহাসবিদরা আর্য সভ্যতাকে ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন। যার ফলে ভারতীয় সভ্যতার ক্রম ভুল পথে চালিত হয়েছে। এসব প্রমাণ করতে গিয়ে বেদ, উপনিষদ থেকেও অনুষঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে।
এ তো গেল আর্যদের ভারতীয় বলে দাবির চেষ্টা। এ ছাড়াও আর্যরা যে অন্যান্য জাতির থেকে সেরা, তাও বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের উক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা রয়েছে সেই ক্যালেন্ডারে। এছাড়াও রয়েছে ইউনিকর্নের তত্ত্ব। একশৃঙ্গযুক্ত কিংবদন্তির ঘোড়াকে একশৃঙ্গ ঋষি বলে উল্লেখ করে সেই ধারণা ভারত থেকেই গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে পাথরে আঁকা প্রাগৈতিহাসিক ছবি। এর আগেও ভারতীয় জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চাকে মহিমান্বিত করতে গিয়ে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন আইআইটির অধ্যাপকরা।
সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির তরফে সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, আইআইটির মতো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রথম শ্রেণির প্রতিষ্ঠানে নানা পৌরাণিক এবং অনৈতিহাসিক বিষয়কে বিজ্ঞান এবং ইতিহাসের নামে তুলে ধরা হচ্ছে। আরএসএসের উদ্দেশ্যমূলক হিন্দুত্ববাদী কল্পনাপ্রসূত বিষয়গুলি যা এতদিন তাদের অনুগামীদের মধ্যে প্রচার করত, সেগুলিকে জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার বেপরোয়া প্রচারও শুরু হয়েছে।