৬ দিন পর অবশেষে ধরা পড়ল কুলতলির বাঘ
অবশেষে ধরা পড়ল কুলতলির বাঘটি। ৬ দিন পর বাগে এল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হতেই ‘খাঁচায়’ ধরা পড়ে সেটি। রাতভর রয়্যাল বেঙ্গলের গর্জন শোনা যায়। সকালেও শোনা যায় হুঙ্কার। কিন্তু কিছুতেই দেখা যাচ্ছিল না বাঘটিকে। লুকিয়ে বসে থাকা বাঘটিকে ধরতে সকাল থেকে নদী থেকে জল নিয়ে জলকামান দাগা শুরু হয়। ব্যবহার করা হয় চকোলেট বোমা, লঙ্কা-পটকাও। কিন্তু কিছুতেই সেটির নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষমেশ একঝলক তার দেখা পাওয়া যেতেই, তাকে ‘স্পট’ করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়েন বনকর্মীরা। ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হতেই অবশেষে খাঁচাবন্দি দক্ষিণরায়। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, বাঘটিকে এবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। বাঘটির শরীরে কোথাও কোনও আঘাত রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, টানা ৬ দিন ধরে রুদ্ধশ্বাস টেনশন, আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছিল কুলতলিবাসীর। ওদিকে আবার বাঘ দেখতে গ্রামবাসীদের উত্সাহেরও অন্ত ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বাঘটির যেন কোনও ক্ষতি না হয় তাই গতকাল এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পাশাপাশি মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সতর্কও করে বনদফতর। উল্লেখ্য, বাঘ ধরার জন্য একাধিক দল গঠন করে বন দফতর। একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়। গর্জন শুনে বনের মধ্যে একটি জায়গায় বাঘটি আটকে রয়েছে বলে চিহ্নিত করে বন কর্মীরা। সেই জায়গাটি ঘিরে ফেলা হয় প্রথমে। বাঘ ধরতে প্রথমে জাল পাতা হয়। সেই জাল আবার ছেঁড়ার চেষ্টাও করে রয়্যাল বেঙ্গল। ওদিকে জালের বাইরে ঘুমপাড়ানি বন্দুক নিয়ে তৈরি থাকেন বনকর্মীরা।
গাছে মাচা তৈরি করে সেখানে বন্দুক নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন বনকর্মীরা। বাঘটি গোপন আস্তানা থেকে বের হলেই, তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে অজ্ঞান করার পরিকল্পনা করা হয়। এখন বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে অজ্ঞান করার সময় সেটি হিংস্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে গুলি লাগার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট খুব ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সময়। কারণ তখন জালের মধ্যে বাঘের তাণ্ডব চালানোর সম্ভাবনা থাকে। জাল ছিঁড়ে বাঘটির গ্রামের দিকে ছুটে আসারও আশঙ্কা থাকে। সেকথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় বনদফতর। ওই এলাকায় গ্রামবাসী থেকে বাকি সবার প্রবেশ নিষেধ করে দেওয়া হয়। শেষে ৬ দিন পেরিয়ে খাঁচাবন্দি রয়্যাল বেঙ্গল।