দেউচা পাঁচামি প্রকল্পে চাকরির ঘোষণায় সাড়া দিয়ে জমিদান করলেন ২১০ জন
দেউচা পাঁচামির (Deucha-Pachami) প্রস্তাবিত কয়লাখনির জন্য জমি দিলে চাকরি মেলার ঘোষণার পর সোমবার জমিদাতাদের কার্যত লাইন পড়ল সিউড়িতে। এলাকার দু’শোরও বেশি মানুষ এদিন দলিল দিয়ে এসে স্বেচ্ছায় জমি দিতে সম্মতি দেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, বীরভূমের আবদারপুরে দেউচা পাঁচামি কয়লাখনির প্রোজেক্ট অফিসে এলাকার চারশোর বেশি বাসিন্দা তাঁদের জমি দিতে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হন। তাদের মধ্যে ২১০ জনের কাগজ ঠিক থাকায় তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। বাকিদেরও জমির নথির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
জেলাশাসক বিধান রায় এদিন ওই জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলে জনান, “আগে প্যাকেজের টাকা জমিদাতার দেওয়া নিজস্ব অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। পরিবারের মনোনীত ব্যক্তি চাকরিতে যোগ দেবেন। তারপরই পিডিসিএলের পক্ষ থেকে জমিদাতার জমি খনির কাজে ব্যবহার করা হবে।”অন্যদিকে জমি দিয়ে সরকারের পাশে দাঁড়ানো এলাকাবাসীর বক্তব্য, প্রস্তাবিত কয়লাখনি যত দ্রুত হবে, ততই তাঁরা খুশি হবেন। প্রস্তাবিত ওই খনি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ প্রকল্পের বিপক্ষে সরব হলেও ঠিক সেই আবহে সোমবার জমিদাতাদের ওই ইতিবাচক পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
দেউচা পাঁচামিতে কয়লাখনির প্রস্তাবিত প্রথম পর্যায়ের এলাকায় রায়তি জমিতে প্রায় আটশো পরিবারের বাস। সমীক্ষা রিপোর্টে প্রায় এমনই সংখ্যা উঠে এসেছে। বাকি অংশ সরকারি জমি ও বনভূমি এলাকা। প্রস্তাবিত ওই এলাকায় হিংলো পঞ্চায়েত মিলিয়ে কমবেশি ১২টি গ্রাম আছে। ইতিমধ্যেই প্রত্যেকের জন্য সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। চলছে তার প্রচার। আবার প্যাকেজের পুনর্বিবেচনার জন্যও দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এলাকার আদিবাসী সংগঠনের নেতারা। সেই দাবি পুনরায় বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়া এসেছে বলে গত শুক্রবারই জানান জেলাশাসক। সেদিনই তিনি জমি দিলে পুলিশে চাকরির সরকারি ঘোষণার পাশাপাশি তার জন্য ফর্ম বিলির কথাও জানিয়ে দেন।
দেওয়ানগঞ্জের সোম হেমব্রম, ফিলিপ কিস্কু-সহ একাধিক বাসিন্দা খনির জন্য জমি দিতে সোমবার প্রোজেক্ট অফিসে হাজির হন। ফিলিপ জানান, “আমি ও স্ত্রী, দু’জনের নামেই জমি আছে। আমরা সব জমি সরকারকে দিতে আগ্রহী।” কেন্দ্রপাহাড়ির রঞ্জিত রাউত, বিশ্বজিৎ মারিয়াও এদিন জমি দিতে সম্মতি জানান সরকারকে। বিশ্বজিৎবাবু জানান, চাকরির জন্য তাঁর ছেলে ষষ্ঠী মারিয়াকে মনোনীত করেছেন তাঁরা। দেওয়ানগঞ্জে জমি না থাকলেও বাড়ি আছে দিলদার হোসেনের। তিনি খনির জন্য বসতবাড়ি তুলে দিলেন পিডিসিএলের হাতে। তাঁর মতে, প্যাকেজ ঠিক আছে। তবে পুনরায় বিবেচনার যে দাবি উঠেছে, তা পূরণ হলে ভাল হয়।