স্কুল কলেজের পরিচয়পত্র দেখিয়েও ১৫ বছরের ঊর্ধ্বদের মিলবে করোনার টিকা: কেন্দ্র
শুধুই সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, স্কুল-কলেজেও এবার হবে কোভিড টিকাকরণ। আগামী ৩ জানুয়ারি শুরু হতে চলেছে ১৫ ঊর্ধ্বদের ভ্যাকসিন কর্মসূচি। তার দু’দিন আগে, অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে নাম নথিভুক্ত করা যাবে। ২০০৭ সালের জানুয়ারি বা তার আগে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই করোনা টিকার জন্য কো-উইনে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারবেন। আবেদন করা যাবে টিকাকেন্দ্রে গিয়েও। এরপরও উদ্বেগ ছিল একটাই—পরিচয়পত্র। কারণ, অনেকেরই যে আধার কার্ড নেই! সোমবার সেই ধন্দও দূর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন নিতে স্কুল-কলেজের সচিত্র পরিচয়পত্র বয়সের প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগানো যাবে। ২৫ ডিসেম্বর রাতবিরেতে আচমকাই ঘোষণাটি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণের একদিকে ছিল কিশোর-কিশোরীদের টিকার সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, আর অন্যদিকে কো-মরবিড ষাটোর্ধ্ব এবং কোভিড যোদ্ধাদের বুস্টার ডোজের ঘোষণা। কো-উইনে নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন তাঁরাও। টিকাকরণ (সরকারি ভাষায় প্রিকশন ডোজ) শুরু হবে আগামী ১০ জানুয়ারি। তবে শর্ত একটাই। স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর ৩৯ সপ্তাহ সম্পূর্ণ হলেই তৃতীয় তথা বুস্টার ডোজের জন্য আবেদন করা যাবে। তার আগে নয়। মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, যাঁরা ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের নাম কো-উইনে রয়েছে। ৩৯ সপ্তাহ সম্পূর্ণ না হলে তাঁদের কেউ যদি ফের বুস্টারের জন্য আবেদন করেন, তিনি ধরা পড়ে যাবেন। কারণ, আগের মোবাইল নম্বর দিয়েই তাঁদের নাম তুলতে হবে কো-উইনে। এছাড়া অবশ্য টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে নাম লেখানোর এবং ভ্যাকসিন নেওয়ার সুবিধায় কোনওরকম কাটছাঁট করা হয়নি।
কোভিড এখনও বিদায় নেয়নি। তার মাঝেই এসেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। ইউরোপ এবং আমেরিকায় করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ভারতে মারাত্মক কোনও ছাপ ওমিক্রন ফেলেনি। বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন, এই ভ্যারিয়েন্ট তিনগুণ বেশি হারে সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম হলেও এখনই চিন্তার কিছু নেই। এদেশে ওমিক্রন মারণ হয়ে দেখা দেয়নি। বরং সামান্য কিছু উপসর্গ এবং কয়েকদিনের মধ্যেই সুস্থতার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে রোগীর। এরপরও অবশ্য সতর্কতায় খামতি রাখতে চাইছে না কেন্দ্র। তাই করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বুস্টার নামকরণ না করেও কো-মরবিড ষাটোর্ধ্বদের জন্য চালু হচ্ছে তৃতীয় ডোজ। পাশাপাশি সোমবার সকালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভারতে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭৮। তবে সাবধানতার মার নেই। তাই নতুন বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোভিড বিধির কড়াকড়ি বহাল রাখছে কেন্দ্র। সেই মতো পশ্চিমবঙ্গ সহ সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক করে চিঠিও দিয়েছে মোদী সরকার। বলা হয়েছে, জেলা স্তরে কোভিডের নজরদারি বাড়ান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। মাস্ক পরার ক্ষেত্রে যে গা ছাড়া ভাব দেখা দিয়েছে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেছে কেন্দ্র। বলা হয়েছে, কোনও যানবাহনে, রাস্তায় বেরলে কিংবা কর্মক্ষেত্রে মাস্ক পরার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বজায় রাখতে হবে দূরত্ব। প্রকাশ্যে থুতু ফেলে ধরা পড়লেই হবে জরিমানা। স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী হবে এই জরিমানা। এর পাশাপাশি ওয়ার্ক ফ্রম হোমের পরামর্শও দিচ্ছে কেন্দ্র।