বাকি পুরভোটে তৃণমূলের নজর মহিলা ভোটের দিকে
কলকাতা পুরভোটে সাফল্যের পর তৃণমূলের নজর এবার শহরতলি, জেলায়। ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতেই চার পুরসভার ভোট। সব কটি পুরসভাতেই জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছে রাজ্যের শাসক শিবির। তৃণমূলের স্পষ্ট বক্তব্য, কোনও নির্বাচনকেই হাল্কা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না। আর সেক্ষেত্রে মহিলা ভোটকে দলের অনুকূলে আনতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর কথা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা নিয়ে নেমেছে তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড।
আগামী ২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি পুরসভায় ভোট। কলকাতা পুরভোটের সাফল্যকে পুঁজি করে নতুন উদ্যমে নেমে পড়েছে তৃণমূল। প্রার্থী তালিকা এক-দুই দিনের মধ্যে প্রকাশ হয়ে যাবে। ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রাতিষ্ঠা দিবস রয়েছে। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে তা পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ফলে পুরভাটের প্রচারে দেওয়াল লিখনের কাজেও নেমে পড়েছেন তৃণমূলের কর্মীরা। দেওয়ালে তৃণমূলের প্রতীক চিহ্ন এঁকে প্রার্থীর নাম ফাঁকা রাখা হচ্ছে। যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে তৃণমূলকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক।
নির্বাচন হতে চলা চারটি পুরসভা রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জুড়ে রয়েছে বিধাননগর। রাজারহাট-গোপালপুর, রাজারহাট-নিউটাউন ও বিধাননগর তিনটি বিধানসভাই এখন তৃণমূলের হাতে। সিন্ডিকেট নিয়ে অভিযোগ এখন কম। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যাওয়া সব্যসাচী দত্ত ফিরে এসেছেন তৃণমূলে। তবে বিধানননগর পুরসভা এলাকার একটি বড় অংশে অবাঙালি মানুষের বসবাস। বিধানসভা নির্বাচনে বেশ কিছু ভোট গিয়েছে বিজেপিতে। অন্যদিকে শিলিগুড়ি বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছে বিজেপি। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের একাধিক বিধানসভায় পদ্ম ফোটে। বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে আসানসোল, দুর্গাপুরেও খাতা খোলে বিজেপি। তবে চন্দননগর এলাকায় বিজেপি সেই অর্থে দাগ কাটতে পারেনি। তৃণমূল মহাসচি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, কোনও পুরসভার নির্বাচনকেই আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না। সহজ ভাবে ভাবার কারণ নেই। যে কোনও নির্বাচনকেই যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দল নেমে পড়েছে।
কলকাতার মানুষ যেভাবে দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন। তাতে আমরা আশাবাদী বাকি পুরসভাতেও কলকাতার ছায়া আরও দীর্ঘতর হবে। আস্থা থাকবে জোড়াফুলেই। ২০১৫ সালের বিধাননগর নির্বাচনে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনা কোনওভাবেই যাতে না হয়, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে। পার্থবাবু বলেছেন, কোথাও গণ্ডগোল নয়। গণতান্ত্রিক পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখতে পারলেই মানুষ আরও বেশি আস্থা রাখবেন। একইসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেছেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই কাম্য। গণ্ডগোল বা অশান্তি হলে, মানুষ তা ভালোভাবে নেয় না।