রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের চোখ রাঙানি নিয়ে বর্ষবিদায় রাজ্যে

January 1, 2022 | 2 min read

কলকাতার পার্ক স্ট্রিট

মেতে ওঠার প্রস্তুতি ছিল সবরকমভাবে। কিন্তু গত তিন-চারদিনের মধ্যে আমূল বদলে গিয়েছে দেশ তথা রাজ্যের করোনা-চিত্র। সেই সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার, বছরের শেষ দিনে মানুষের উচ্ছ্বাস, উৎসবমুখরতা ধরা পড়লেও কোথাও যেন একটু রাশ টানা হয়েছে তাতে। কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনার পর্যটন কেন্দ্র, পিকনিক স্পটগুলিতে ভিড় ছিল ভালোই। আজ, বর্ষবরণের দিনেও ভালো ভিড়ের ইঙ্গিত মিলেছে। শহরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা সেজে উঠেছে আলোকসজ্জায়। কোথাও কোথাও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুলিসের কড়াকড়ি নজরে পড়েছিল। শুক্রবার রাত যত বেড়েছে, বড় রাস্তাগুলিতে পুলিসের টহলদারি গাড়ির আনাগোনা, নাকাচেকিং, মদ্যপ অবস্থায় ড্রাইভিংয়ের জন্য ধরপাকড় ইত্যাদি বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন পিকনিক স্পট, পর্যটন কেন্দ্রে পুলিস মাইক লাগিয়ে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজারের ব্যবহার সহ করোনা বিধি মেনে চলার জন্য প্রচার চালিয়েছে। তবে উৎসবমুখর মানুষ তাতে যে খুব একটা সাড়া দিয়েছে, তেমনটাও নয়!


বর্ষশেষ ও নতুন বছরের এই সন্ধিক্ষণে কোথাও যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য হাওড়া সিটি পুলিস বৃহস্পতিবার থেকেই তৎপরতা শুরু করে। হাওড়া ব্রিজ, বিদ্যাসাগর সেতু, বালি ব্রিজ সহ কলকাতা শহরে ঢোকার সবক’টি প্রবেশপথেই কড়া নজরদারি চালাচ্ছে তারা। পাশাপাশি ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পুলিসের টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াডের পুলিসকর্মীরা সাদা পোশাকে ঘুরে ঘুরে নজর রেখেছেন পরিস্থিতির উপর। হাওড়া শহরের একাধিক শপিং মল, পানশালায় নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিস। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিসের সুপার সৌম্য রায় জানান, এই দু’দিন ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। গড়চুমুক, গাদিয়াড়া, বাগনান, কালসাপার মতো পিকনিক স্পটগুলিতে করোনা বিধি মেনে চলতে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। যারা তা মানবে না, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় পিকনিকের আসর জমে ওঠে। এদিনও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যান্ডেল চার্চ, ইমামবাড়ার মতো দর্শনীয় স্থানগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। চন্দননগর স্ট্র্যান্ড রোড, ফরাসি কলোনি, শ্রীরামপুরের ডাচ কলোনি ইত্যাদি জায়গায় রাতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় এদিন বেশি সংখ্যক পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। হুগলি গ্রামীণ পুলিস এবং চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিস উভয়েই মানুষকে করোনা নিয়ে সচেতন করতে নানাভাবে প্রচার চালিয়েছে। 


বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে উত্তর ২৪ পরগনার শহরাঞ্চলে ছিল উৎসবের আমেজ। বারাসত, মধ্যমগ্রাম, হাবড়ার বিভিন্ন এলাকায় আলোয় সাজানো হয়। পাড়ার মোড় বা কোনও ফাঁকা জায়গা মানেই সেখানে পিকনিকের আয়োজন করতে দেখা গিয়েছে স্থানীয় লোকজনকে। বারাকপুর এলাকায় গঙ্গার পাড়ে ভিড় ছিল অন্যান্যদিনের চেয়ে বেশি। বিটি রোডে পুলিসের নজরদারিও এদিন রাতে বেড়েছে। তবে করোনা আতঙ্ক যে ফের গ্রাস করছে মানুষকে, তা এদিন পথেঘাটে বেরলেই টের পাওয়া গিয়েছে। মাস্ক পরতে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ মানুষকে। তার মধ্যেও কেউ কেউ বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন, বকখালি  সহ বিভিন্ন পিকনিক স্পট ও পর্যটনকেন্দ্রেও ব্যাপক ভিড় হয়েছে এদিনই। আজ এসব জায়গায় আরও বেশি ভিড় হতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। সেই জন্য করোনা বিধি মেনে চলতে নানাভাবে প্রচার শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও পুলিস। তবে শহরের দিক থেকে এসব প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরতে যাওয়া লোকজন করোনা বিধি খুব একটা মানছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Kolkata Police, #omicron variant, #Happy New Year, #New Year 2022

আরো দেখুন