কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গে কথা বলতেও উদ্ধত মোদী, বিস্ফোরক অভিযোগ মেঘালয়ের রাজ্যপালের
তিন কালা কৃষি আইনের প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি সীমান্তে দেশের অন্নদাতা কৃষকেরা আন্দোলন করছিলেন। সাম্প্রতিক কালে যা ছিল দেশের অন্যতম বৃহত্তম গণ আন্দোলন। গত ২৬শে নভেম্বর এই আন্দোলনের বর্ষপূর্তি হওয়ায় আগেই, কৃষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে পিছু হাঁটে বিজেপির সরকার। আইন প্রত্যাহার করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
এবার সেই কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। প্রসঙ্গত, সত্যপাল মালিক এর আগে গোয়া এবং জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল পদে আসীন ছিলেন। কিছুদিন আগেই তিনি বিজেপি শাসিত গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। তার পরেই তাকে গোয়ার বদলে মেঘালয়ের রাজ্যপাল করা হয়।
গতকাল তাকে হরিয়ানার চারখী দাদরীতে ফোগত খাপ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েই সত্যপাল মালিক মোদীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। মোদীর ঔদ্ধত্যের কথা তিনি প্রকাশ্যে আনলেন। গতকাল তিনি বলেন, কৃষক আন্দোলনের বিষয়ে কথা বলতেও মোদী অসহিষ্ণু।
সত্যপাল জানিয়েছেন, তিনি কৃষক আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা করতে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। কিন্তু তার ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে রীতিমতো ঝামেলার মধ্যে দিয়ে ওই পাঁচ মিনিটের আলোচনা কোনক্রমে শেষ হয়।
অনুষ্ঠান মঞ্চে তিনি বলেন, “মোদী খুবই উদ্ধত! আমি যখন বললাম কৃষক আন্দোলনের কারণের আমাদের দেশের পাঁচশ কৃষক মারা গিয়েছেন, তখন তিনি অর্থাৎ মোদী প্রশ্ন করেন, ‘আমি (মোদী) কি তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী?’ “
সত্যপাল এর উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ আপনিই, আপনি যখন দেশের রাজা, আপনিই দায়ী।” এরপরে মেঘালয়ের রাজ্যপালকে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে বলেন মোদী। মেঘালয়ের রাজ্যপাল নিজেই জানিয়েছেন তিনি অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করেছেন।
সত্যপাল এরপরেই বিজেপি সরকার এবং বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করে বলেন, তিনি ভয় পান না। যদি প্রতিবাদ করার জন্য তার রাজ্যপালের পদ চলে যায়, তাতেও তিনি প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, “কৃষক আন্দোলন চলাকালীন কৃষকদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে বিজেপি সরকারের সততা সঙ্গে সেই সব মামলা প্রত্যাহার করা উচিত। সরকারকে আইনত বৈধ্যভাবে ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের কাঠামোর সংস্কারও করতে হবে।”
এই অনুষ্ঠানের মধ্যেই তিনি বলেন, “দেশের বিজেপি সরকার যদি মনে করে থাকে, বিক্ষোভ শেষ হয়ে গিয়েছে। একদমই তা নয়! আন্দোলন কেবল বিরতি নিয়েছে। যদি কৃষকদের প্রতি কোন রকম অবিচার করা হয়, তবে কৃষকেরা ফের আন্দোলন শুরু করবেন।”
কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ” এই সুযোগে কৃষকদের উচিত নিজেদের ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের কাঠামো ঠিক করে নেওয়া।”
মেঘালয়ের রাজ্যপাল বলেন, “কৃষকেরা হলেন দেশের মেরুদন্ড। সরকারের আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায়, তারা আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন। তার মানে এই নয় যে আন্দোলন থেমে গিয়েছে। প্রতিশ্রুতি না পূরণ হলে কৃষকেরা ফের আন্দোলন শুরু করবে।”