বাংলায় জারি কোভিড বিধিনিষেধ, পুরভোটের ভবিষ্যৎ কী?
কলকাতা পুরভোটের পর নজরে এখন আসন্ন চার পুরসভার ভোট। করোনা মোকাবিলায় রাজ্য কড়া বিধি নিষেধ জারি করার পর এখন কৌতূহল ২২ জানুয়ারির পুরভোট নিয়ে। সেই ভোট হবে কি না, তার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সব ক’টি রাজনৈতিক দল। ভোটের ঘোষিত দিনক্ষণ কি একই থাকবে, প্রাথমিক কৌতূহল সেটা নিয়েই। যদি ওই দিনে ভোট হয়, তাহলে কমিশন স্বাস্থ্য-সুরক্ষার জন্য আর কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, তার দিকেও নজর পুরসভা এলাকার ভোটারদের।
আগামী ২২ জানুয়ারি ভোট হবে বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরসভায়। ভোটের জন্য ইতিমধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির তরফে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। সেইমতো মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া চলছে। আজ, সোমবার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষদিনে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস প্রার্থীদের তা জমা দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। নজরকাড়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বিধাননগর পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। তিনি আজ মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন। একইসঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
গুরুত্বপূর্ণ হল, রবিবার রাজ্য সরকারের তরফে করোনা মোকাবিলায় একাধিক বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০ জনের বেশি সভায় জমায়েত নয়। তবে পুরভোট নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ২২ তারিখের পুরভোটের বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারা যেমনভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে, আমরা সেইমতো কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী চলব। যেহেতু কমিশনের নতুন কোনও নির্দেশ নেই, ফলে বিধি মেনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর্ব চলবে। কমিশনের কোনও নতুন নির্দেশ এলে সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।
এপ্রসঙ্গে অবশ্য সরকারকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছে বিরোধী শিবির। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা সব পুরসভার ভোট একসঙ্গে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। এখন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ করেছে। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আর পুরভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেটা দেখার।
সরকার এই কড়া বিধি নিষেধ নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নটা তুলেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। আর কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, আসন্ন পুরভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অবিলম্বে সর্বদল বৈঠক করা উচিত। ভোটার ও ভোট কর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে কমিশনের কী কী ভাবনাচিন্তা রয়েছে, নতুন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটা স্পষ্টভাবে জানানো হোক। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যদি নির্ধারিত সময়ে ভোট হয়, তাহলে বড় সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। বাড়ি বাড়ি প্রচারের ক্ষেত্রে প্রার্থীর সঙ্গে দলীয় কর্মীর সংখ্যা আরও কমিয়ে ফেলা হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচারের উপর আরও জোর দেওয়ার বিষয় উল্লেখ করা হবে বলে মত।