বিধাননগর পুরভোট: করোনাবিধি মেনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার তৃণমূল প্রার্থীদের
শুধু আমজনতার সচেতনতার অভাবেই রকেটের গতিতে হচ্ছে করোনার সংক্রমণ। তার মধ্যেই আগামী ২২ জানুয়ারি বিধাননগর পুরসভার ভোট। মনোনয়নপত্র জমার প্রক্রিয়া শেষের পর প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। তবে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম কিংবা কংগ্রেস কারও প্রচারেই ‘ঝাঁঝ’ নেই তেমন। তার কারণ কী? প্রার্থীরাই বলছেন, মানুষের জন্যই ভোট। তাই তাঁদের সুস্থ থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। অত্যধিক জাঁকজমকপূর্ণ মিছিল কিংবা জনসভা সংক্রমণের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই শাসক হোক কিংবা বিরোধী দলের প্রার্থী, আড়ম্বরপূর্ণ প্রচারের পথে হাঁটছেন না কেউই। অনেকে আবার বাতিল করেছেন বড় মিছিল, জনসভা।
৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তুলসী সিনহা রায় ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রচার শুরু করেছেন। তবে সেটা শুধুমাত্র ডোর টু ডোর। তিনি বলেন, যে বাড়িতে যাচ্ছি, তার কলিং বেল টিপে বাইরে অপেক্ষা করছি। সেখানেই এলাকাবাসীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় এবং ভোট চেয়ে নেওয়া। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী আমার সঙ্গে আর চারজন দলীয় কর্মী থাকছেন। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনেই প্রচারে নেমেছি। তিনি আরও বলেন, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মিছিল ও জনসভা করার ইচ্ছা তো থাকেই। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে তা বাতিল করেছি। শুধু আমার ওয়ার্ড নয়, গোটা বিধাননগরবাসী সুস্থ থাকুন এই কামনা করি। অন্যদিকে, সিএফ ব্লকে মাত্র তিনজনকে নিয়ে প্রচারে যান ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। প্রত্যেকের বাড়ির দরজার বাইরে থেকে দূরত্ববিধি মেনে প্রচার চালিয়েছেন প্রাক্তন মেয়র।
রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও প্রচারের স্বার্থে একই সুরে সুর মিলিয়েছেন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শংকর ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, যে ব্লকে প্রচারে যাচ্ছি, তার প্রায় ২০ শতাংশ বাসিন্দা কোভিডে আক্রান্ত। ফলে অনেকেই বেল টিপলেও দরজা খুলছেন না। ফলে প্রচারে খানিকটা সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনও জনসভার পরিকল্পনা নেই। একটি জিপে করে ৪ জনকে নিয়ে বেরব। মাইকে প্রচার করতে করতে এলাকা ঘোরা হবে। তাছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কারণ সংক্রমণ বাড়লে ভোটের দিন তার প্রভাব পড়তে পারে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী বাসব বসাকের দাবি, বড়দিন এবং বর্ষবরণের উৎসবে কোভিডবিধিতে ছাড়ের জন্য আজ এই পরিস্থিতি। জাঁকজমকপূর্ণ প্রচারের পথে হাঁটার কোনও অবকাশ নেই। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে বাড়ির বাইরে থেকেই প্রচার
করছি। তবে আগামী দিনের ইচ্ছা আছে, ব্লকের ভিতরে ২০-২৫ জন মানুষ নিয়ে ছোট পথসভা করার। সেখানে বামফ্রন্টের রাজ্য কমিটির সদস্যরা থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সশরীরে যখন প্রচারে ‘বাধা’, তখন সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাচ্ছেন অনেক প্রার্থীই। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছেন। ‘গুগল মিট’-এ এলাকাবাসীদের নম্বর যুক্ত করে কম্পিউটারের পর্দায় ভোট চেয়ে নিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, টেকনোলজির যুগ। তা ভোটের ময়দানে ব্যবহার করতে কোনও ক্ষতি নেই। সংক্রমণ যখন বাড়ছে, তখন ভার্চুয়াল মাধ্যমই একমাত্র ভরসা হতে পারে। পাশাপাশি অনেক প্রার্থীই নিজেদের ফেসবুক কিংবা ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারের ছবি ভিডিও করছেন। দেওয়াল লিখনের ছবি থেকে ভোটে জিতলে কী করবেন, সবই থাকছে সেখানে।