বিধানসভা ভোটের মুখে মোদী-বর্জনের হুঙ্কার উঠল পঞ্জাবজুড়ে
বুধবারের স্লোগান ছিল ‘গো ব্যাক মোদী’। আক্ষরিক অর্থেই তার বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। বৃহস্পতিবার আরও একধাপ এগিয়ে মোদী-বর্জনের হুঙ্কার উঠল পঞ্জাবজুড়ে। বিধানসভা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতায় কৃষক সংগঠনগুলির নতুন স্লোগান—‘পঞ্জাব রিজেক্টস মোদী’। কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। বুধবারের ঘটনা নিয়ে এদিন কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা, ‘সাহস থাকলে বিজেপি বলুক, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে বাস্তবিকই অধিকাংশ আসন ছিল ফাঁকা। সভা ফ্লপ হওয়ার আশঙ্কায় কর্মসূচি বাতিল করে ফিরে যেতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে।’ মোর্চা নেতাদের দাবি, পঞ্জাবের কৃষকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে আদতে কিছু করেননি, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। কেন্দ্রের রক্তচাপ বাড়িয়ে একটি বিবৃতিও জারি করে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। তাদের দাবি, মিথ্যে কথা বলে পঞ্জাবের মানুষ এবং কৃষক আন্দোলনের বদনাম করছেন মোদী। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে বিরোধ প্রদর্শনের কোনও কর্মসূচি কৃষকদের ছিল না। বরং বিজেপিরই ঝান্ডা হাতে একটি দল নরেন্দ্র মোদীর নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে কনভয়ের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।
আন্দোলনকারীদের অবরোধের জেরে বুধবার প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট আটকে ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। যদিও যাবতীয় বিতর্ককে সপাটে উড়িয়ে দিচ্ছেন দিল্লির সীমানায় বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে আসা কৃষকরা। সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য তাঁরা কাঠগড়ায় তুলছেন খোদ মোদীকেই। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বলছে যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল। আবার পঞ্জাব সরকার বলছে যে সমাবেশ স্থল ফাঁকা থাকায় উনি ফিরে গিয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজেদের বাঁচাতে চাইছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেখানে যাওয়া উচিতই হয়নি। তাঁর সফর যখন চূড়ান্ত হল, তখন কি নিরাপত্তাজনিত কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি? বিমানবন্দরের আধিকারিকদের তিনি যা বলেছেন, তাতেই স্পষ্ট পুরোটাই আসলে নরেন্দ্র মোদীর স্টান্ট। সাধারণ মানুষের সমবেদনা পাওয়ার জন্য সস্তা রাজনীতি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’
বিকেইউ (ক্রান্তিকারী) প্রধান সুরজিৎ সিং ফুলের দাবি, ‘ফিরোজপুরের এসএসপি আমাদের বলেছিলেন, রাস্তা ফাঁকা করতে হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নাকি সড়কপথে এই রুট ধরেই সমাবেশ স্থলে যাবেন। আমরা ভেবেছিলাম, প্রশাসন আমাদের বোকা বানাতে চাইছে।’ তবে বিক্ষোভের জন্য আন্দোলনরত কৃষকদেরই ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চার আরও হুঁশিয়ারি, পঞ্জাবে কী কী ভুল করেছেন, তা এবার ভেবে দেখতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। আগামী সপ্তাহেই ফের দিল্লিতে বৈঠকে বসছে মোর্চা নেতৃত্ব। তার আগে যেভাবে কেন্দ্র-কৃষক সংঘাত তীব্র হয়ে উঠছে, তাতে আশঙ্কার মেঘ গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।