দিল্লি-মুম্বইতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শিখর জানুয়ারিতেই? এমনটাই আভাস দিল মডেল
কার্যত বাঁধ মানছে না ভারতের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পার করে গিয়েছে ১ লাখের গণ্ডি। প্রশ্ন, উঠছে এই পরিস্থিতি থেকে কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে করোনা গ্রাফ? যার উত্তরে, কানপুর আইআইটির অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়ালের সূত্র মডেল একাধিক বার্তা দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সেই মডেল অনুযায়ী, বলা হচ্ছে, জানুয়ারি মাসের শেষ দিকেই সম্ভবত ভারতে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় স্রোত। এদিকে, লাগামহীনভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে মুম্বই ও দিল্লিতে। সেই জায়গা থেকে প্রশ্ন উঠছে যে, করোনার জেরে এই দুই মেট্রো শহরে কী পরিস্থিতি হতে পারে?
অধ্য়াপক মণীন্দ্র আগরওয়ালের সূত্র মডেল বলছে যে, মুম্বই ও দিল্লিতে ১৫ জানুয়ারি থেকেই স্রোত ‘পিক’ নিতে শুরু করবে। অর্থাৎ ওমিক্রনের নেতৃক্বে করোনার যে স্রোত বর্তমানে এই দুই শহরকে বিধ্বস্ত করেছে, তার প্রবল ভয়াবহ রূপ জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন এই গবেষক। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, সূত্র মডেল অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের শেষ কিম্বা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে যদি সারা দেশে করোনার তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়ে, তাহলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ থেকে ৮ লাখ পর্যন্ত যেতে পারে। তবে অধ্যাপক বলছেন, দ্বিতীয় স্রোতের থেকে করোনার তৃতীয় স্রোতের রূপের ভয়াবহতা খানিকটা কম হবে। তিনি বলছেন, ‘ এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রেক্ষিতে বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী , দেশে করোনার তৃতীয় স্রোত দেখা যেতে পারে ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ। তবে দ্বিতীয় স্রোতের তুলনায় তার প্রভাব খানিকটা হালকা থাকবে। আপাতত যা দেখা যাচ্ছে ওমিক্রন, ডেল্টার মতো নয়।’
মণীন্দ্র আগারওয়াল বলছেন, মুম্বইতে করোনার জেরে যে স্রোতের প্রসঙ্গ উঠছে, তাতে ৭ দিনের গড় অনুযায়ী, ৩০ খেকে ৬০ হাজার আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে ‘পিক’ দেখা দিতে পারে। ফলে সর্বোচ্চ দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ থেকে ৬০ হাজার হতে পারে। দিল্লির ক্ষেত্রে এই ‘পিক’ সাত দিনের গড় অনুযায়ী, ৩৫ থেকে ৭০ হাজার হতে পারে বলে পূর্বাভাস এই অধ্যাপকের। তবে মুম্বইতে কবে পিক আসবে, তার সময়সীমা এই সপ্তাহের শেষের দিকে তাঁর ‘সূত্র মডেল’ অনুধাবন করতে পারবে বলে আশা করছেন অধ্যাপক মণীন্দ্র আগারওয়াল। তাঁর মতে মুম্বইয়ের মতো দিল্লিতেও এই স্রোতের পিক বা শিখর আসতে পারে ১৫ জানুয়ারি নাগাদ। সেক্ষেত্রে দিল্লিতে হাসপাতালের বেড লাগতে পারে ১২ হাজার, অন্যদিকে, করোনার তৃতীয় স্রোতের জেরে মুম্বইতে হাসপাতালের ১০ হাজার বেডের প্রয়োজন পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে এই মডেল। সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষৎকারে তিনি বলেন, যদিও নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রামক ক্ষমতা অনেক বেশি, তবুও এর প্রভাব ডেল্টার মতো নয়। মণীন্দ্র আগারওয়ালের মতে, এই স্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করা দ্বিতীয় স্রোতের তুলনায় সহজ হবে। তাঁর মতে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতিতে বদল আসতে পারে। তবে তার জন্য উপযুক্ত যত্ন ও প্রস্তুতি প্রয়োজন।