প্যাকেজের টোপ দিয়েও শিল্পের চাকা ঘোরাতে ব্যর্থ মোদী সরকার, বড় ধাক্কা খেল আয়কর আদায়
ঋণসর্বস্ব প্যাকেজের টোপ দিয়েও শিল্পের চাকা ঘোরাতে ব্যর্থ মোদী সরকার। ফলে বড়সড় ধাক্কা খেল আয়কর আদায়। করোনা বছর হিসেবে চিহ্নিত গত অর্থবর্ষের থেকেও চলতি আর্থিক বছরে রাজস্ব আদায় কমল প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে দেশের উন্নয়নের খরচ জোগাড় হবে কোন পথে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্যস্ত কেন্দ্র। তবে তুলনামূলক ভালো পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের। দেশের শিল্পনির্ভর রাজ্যগুলির তুলনায় বাংলায় আয়কর আদায়ের হার অনেকটাই স্বস্তিদায়ক।
আয়কর ভবন সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত দেশে আয়কর আদায় হয়েছে প্রায় ৯ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ গত বছর এই সময়ে তা ছিল প্রায় ১০ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে আদায়ের হার। দেশের এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের হাল কী? জানা গিয়েছে, এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে আয়কর আদায় হয়েছে ৩৮ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। গত বছর তা ছিল ৪০ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি সত্ত্বেও, দেশের মধ্যে ভালো অবস্থানেই রাজ্য।
দেশে যে আয়কর আদায় হয়, তার বেশিরভাগটাই আসে শিল্প সংস্থাগুলি থেকে। শিল্পের চাকা ঘুরলে সংস্থায় আয় বাড়ে। তার ভিত্তিতেই তাদের আয়কর দিতে হয়। করোনাকালে শিল্পের পরিস্থিতি চাঙ্গা করতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার সিংহভাগটাই ছিল ঋণ। অর্থাৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে মোটা অঙ্কের টাকা ধার দিয়ে, তাদের উৎপাদনের মাত্রা বাড়াতে চেয়েছিলেন মোদী। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের দাবি, সেই চিন্তা-ভাবনার গোড়াতেই গলদ ছিল। সাধারণ মানুষের হাতে যদি টাকাই না থাকে, তাহলে তাঁরা জিনিস বা পণ্য কিনবেন কী করে? পণ্যই যদি বিক্রি না হয়, তাহলে শিল্প সংস্থাগুলি উৎপাদন কমিয়ে দেবে। যদি উৎপাদন কমে যায়, তাহলে সংস্থাগুলি ঋণ নিতে যাবে কেন? তাই অর্থনীতি বাঁচাতে মোদী প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, বরং আরও খারাপ হয়েছে, তা স্পষ্ট আয়কর আদায়ের খতিয়ানেই। আগামী তিন মাসে আদায় ঘাটতি মেটাতে পারবে বলে আশাবাদী নন অর্থনীতিবিদরা। ফলে আগামী অর্থবর্ষে উন্নয়ন যে কিছুটা থমকে যেতে বাধ্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র প্রাপ্য টাকা দেবে তো! সিঁদুরে মেঘ দেখছে রাজ্যগুলিও।