বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে শান্তনু ঠাকুরের গোপন বৈঠক, হাজির সায়ন্তন, জয়প্রকাশ, রীতেশ
দলের অন্দরে মতুয়া-ক্ষোভ এবং হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ নিয়ে কার্যত বেসামাল রাজ্য বিজেপি। এই আবহে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে বৈঠক করলেন সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারি এবং জয়প্রকাশ মজুমদার। যদিও বৈঠকে ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সে ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি শান্তনু ঠাকুরও।
সদ্যই নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে বিজেপি। তার পর থেকেই দলের অন্দরে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিজেপি-র অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সায়ন্তন। সূত্রের খবর, নয়া কমিটি থেকে বাদ পড়ায় সায়ন্তন দলের সব হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছিলেন। দীর্ঘদিন সহ-সভাপতি থাকা দলের প্রবীণ নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদাররাও কোনও পদ পাননি। জয়প্রকাশকে মুখপাত্র করা হলেও বাকি দু’জন কোনও পদেই নেই। নয়া কমিটি ঘোষণা হওয়ার পরই সায়ন্তনের বাড়িতে আচমকা তৃণমূলের কয়েক জন নেতার হাজির হওয়া রাজ্য-রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল।
অন্য দিকে, রাজ্য এবং জেলা কমিটিতে মতুয়া প্রতিনিধি না থাকায় কয়েক দিন আগেই বিজেপি-র হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছিলেন পাঁচ মতুয়া বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, অশোক কীর্তনীয়া, অসীম সরকার, অম্বিকা রায় এবং মুকুটমণি অধিকারী। তার গত ৪ জানুয়ারি বিজেপি-র সমস্ত গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন শান্তনুও।
বিজেপি সূত্রে খবর, শান্তনু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাজ্য পদাধিকারীমণ্ডলীতে মতুয়া প্রতিনিধি আনার দাবি জানান। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তাঁর দাবি মানা হয়নি। এর পরই পাঁচ বিদ্রোহী বিধায়কের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন শান্তনু।
তার পর জল আরও গড়িয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডাও শনিবার মধ্যরাতে একাধিক সাংগঠনিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তার কিছু দিন আগেই বিজেপি-র সাংগঠনিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে দেন খড়্গপুর সদরের অভিনেতা-বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও। এই নিয়ে জল্পনার মাঝে শান্তনুর বাড়িতে সায়ন্তন, রীতেশ এবং জয়প্রকাশদের আচমকা হাজির হওয়া এবং বৈঠক করা স্বাভাবিক ভাবেই গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়াবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।