বাড়ছে করোনা, গঙ্গাসাগর মেলার রায় পুনর্বিবেচনায় একাধিক আর্জি হাইকোর্টে
গঙ্গাসাগর মেলা হোক তবে কোভিড বিধি মেনে ও শর্তসাপেক্ষে, এমনটাই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আক্রান্তের সংখ্যা বিপজ্জনকহারে বাড়ছে। এখন বিধি মেনে মেলা করলেই কি করোনা রোখা যাবে? লাখ লাখ মানুষের জমায়েত থেকে বড় বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। তাই হাইকোর্টকে ফের রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে মামলার অনুমতি চাইলেন তিন আইনজীবী।
তিনটি মামলা করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিন আবেদনকারী কবিরুল ইসলাম, অজয় কুমার দে ও প্রমোদ ভার্মা। তিন আবেদনকারীর তরফে তিন আইনজীবী শুভঙ্কর নাগ, সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও রিজু ঘোষাল দাবি করেছেন, শুধুমাত্র শর্ত মানলেই কোভিড রোখা সম্ভব নয়। মেলায় লাখ লাখ পুণ্যার্থীর ভিড় হয়। এই বিপুল জমায়েত থেকেই ভয়ঙ্কর করোনা ছড়াতে পারে।
মামলাকারীদের আবেদনে হাইকোর্ট যে ৩ সদস্যের কমিটি গড়েছে, তাতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতির বিরোধিতা করা হয়েছে। বরং এর পরিবর্তে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়ার আবেদন করা হয়েছে। মামলার অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, সোমবার দুপুর ২টোর সময় এই মামলার শুনানি হবে।
গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কোভিড পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীরা যাতে মেলায় ভিড় না জমান সেই আর্জি জানিয়ে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল ভিন রাজ্য থেকে বহু পুণ্যার্থীরা আসেন, তাঁদের আটকানো যাবে না। কোভিড বিধি মেনে মেলার করার আর্জি জানানো হয়েছিল সরকারের তরফে। হাইকোর্ট এই আবেদন মঞ্জুর করে ও মেলা করার জন্য কিছু শর্ত বেঁধে দেয়।
আদালত তার রায়ে জানায়, গঙ্গাসাগর মেলার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করতে হবে। সেই কমিটিতে থাকবেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ ত্রিবেদী। মেলায় হাইকোর্টের নির্দেশ সবদিক দিয়ে মানা হচ্ছে কি না, তা প্রতিদিন খতিয়ে দেখার কথা রয়েছে এই কমিটির সদস্যদের৷ কোনও শর্ত মানা না হলে অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ততক্ষণাৎ মেলা বাতিল করার ক্ষমতা থাকবে এই কমিটির হাতে৷
আবেদনকারীদের দাবি ২০১৩ সাল থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির এখনও পর্যন্ত কার্যকারিতা রয়েছে। আদালতের কোনও নির্দেশে ওই কমিটি স্থগিত হয়নি। তাই নতুন করে কমিটি গঠনের আর কোনও প্রয়োজন নেই। তাই কলকাতা হাইকোর্ট তিন সদস্যের কমিটি গঠনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুক। আদালত যদি মনে করে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে একটি টিম গঠন করতে পারে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের থেকে চিকিৎসকদের টিম করোনা পরিস্থিতি আরও ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে বলে আবেদনে জানানো হয়েছে।