কলকাতা পুর এলাকায় মাটির তলায় পাতা হচ্ছে গ্যাসের পাইপলাইন
পাতালপথেই এবার রান্নার গ্যাস। কলকাতা পুর এলাকায় মাটির তলায় পাতা হচ্ছে গ্যাসের পাইপলাইন। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, আপাতত শহরে ২৪.৬৫ কিমি গ্যাস পাইপলাইন পাতা হবে। তারপর ধাপে ধাপে গোটা শহরকেই জুড়ে দেওয়া হবে ভূগর্ভস্থ গ্যাস লাইনের সংযোগে। বাড়ি বাড়ি পাইপের মাধ্যমে পৌঁছবে রান্নার গ্যাস। বসবে মিটার। সেই মিটারের রিডিং দেখেই প্রতি মাসে আসবে বিল। চোকাতে হবে গৃহস্থকে। ঠিক বিদ্যুতের মতো।
সোমবার পুরভবনে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এনিয়ে বৈঠক হয় পুরকর্তাদের। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার এবং বিশেষ কমিশনার তাপস চৌধুরী সহ পুরসভার পূর্ত, জল সরবরাহ এবং নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। ছিলেন সিইএসসি’র প্রতিনিধিরাও। সেখানে ঠিক হয়েছে, আপাতত পূর্ব এবং দক্ষিণ কলকাতা দিয়ে পাইলট প্রোজেক্ট শুরু হবে। কালিকাপুর, যাদবপুর, গড়িয়াহাট, কালীঘাট, নাকতলা, টালিগঞ্জ, তারাতলা, কাটাপট্টি, পাহাড়পুরকে একারণে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এই কাজ শুরুর আগে পুরসভার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করবে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেইল এবং রাজ্য সরকারি সংস্থা গ্রেটার কলকাতা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড যুক্ত হয়ে এই সংস্থা তৈরি করেছে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, এইসব অঞ্চলে ভূগর্ভে গ্যাসের পাইপলাইন পাতা হবে। তবে কাজ শুরুর আগে করা হবে সমীক্ষা। পুরসভার এক শীর্ষকর্তা বলেন, কলকাতায় মাটির নীচে নতুন করে কোনও পাইপলাইনের পরিকাঠামো তৈরি করা যথেষ্ট ঝুঁকির ব্যাপার। শহরে মাটির নীচে পরিষেবার বহু নেটওয়ার্ক রয়েছে। জলের পাইপ থেকে শুরু করে নিকাশি, ফাইবার কেবল, বিদ্যুতের লাইন— সবই গিয়েছে মাটির নীচে দিয়ে। এর পাশাপাশি গ্যাসের লাইন পাতা হলে বিপদের সম্ভাবনা বাড়বে বই কমবে না। ফলে দেখেশুনেই এগতে হবে। মাটির নীচে বিভিন্ন পরিষেবার লাইনের যাতে ক্ষতি না হয়, সেই দিক মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। পুর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ওই সংস্থাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। বলেছে, আপাতত দু’-এক মিটার রাস্তা কেটে ভূগর্ভস্থ লাইনগুলি কীভাবে গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখুক তারা। কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা হোক আন্ডারগ্রাউন্ড স্কেচ। তার উপর সুপার ইম্পোজ করে গ্যাসের পাইপলাইন এঁকে বুঝে নিতে হবে, কীভাবে এগবে কাজ।
বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের এক কর্তা বলেন, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত পাইপলাইন পাতার কাজ শেষ হয়েছে। দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় গ্যাসের লাইন পাতার কাজ চলছে। তার আগে শহরে বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহের জন্য ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। ইতিমধ্যেই রাজারহাট-নিউটাউন অঞ্চলে কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় কাজ চলছে। এবার কাজ শুরু হবে কলকাতা পুর এলাকায়। আগামী দিনে গোটা কলকাতাতেই বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহের পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। ওই আধিকারিকের দাবি, এর ফলে আগামী দিনে গ্যাসের দাম কমবে। এই খাতে মাসিক খরচ নেমে আসবে পাঁচ থেকে ছ’শো টাকায়।