২৬ জানুয়ারির সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে থাকছে না বাংলার ট্যাবলো?
২০২০ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তিই কি আবার ঘটতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে? ‘কন্যাশ্রী’র মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ও বাদ গিয়েছিল সেবার। একইভাবে এবারও কি ২৬ জানুয়ারির সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে থাকছে না বাংলার ট্যাবলো? হাতে আর মাত্র দু’ সপ্তাহ। ২৩ জানুয়ারি চূড়ান্ত ‘ড্রেস রিহার্সাল’। অথচ ট্যাবলো সংক্রান্ত পাঁচটি বৈঠকের পর আর ডাক না পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। এবার সাধারণতন্ত্র দিবসের থিম, ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব।’ স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে মাথায় রেখেই এই থিম ঠিক করেছে কেন্দ্র। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ফোকাস ছিল, নেতাজি। কারণ, এবার সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী।
সেই মতোই স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশনায়কের ভূমিকা তুলে ধরতে তৈরি হয়েছিল বাংলা। নকশা হয়েছিল থ্রি-ডি। যেখানে ছিল মৈরাংয়ে নেতাজির পতাকা তোলা, রবীন্দ্রনাথ-সুভাষচন্দ্র, আজাদ হিন্দ বাহিনী, ত্রিপুরী কংগ্রেসে গান্ধীজির সঙ্গে নেতাজির ছবি সহ কাউটআউট। মডেল। ঠিক হয়েছিল রাজপথে চলন্ত ট্যাবলোর সঙ্গে ৬৫ সেকেন্ড বাজবে হয় ‘কদম কদম বাড়ায়ে যা’, আর নয়ত ‘ও আমার দেশের মাটি।’ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গেই এতে উদ্যোগী হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
কিন্তু ট্যাবলো সংক্রান্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রকের আর কোনও চিঠি পায়নি নবান্ন। আর তাতেই একপ্রকার নিশ্চিত, সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজপথের প্যারেড থেকে বাদই যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। শেষের দিকে যারা আর বৈঠকে ডাক পায় না, ধরে নিতে হয় তারা বাদ। এই প্রথাই চলে আসছে। মন্ত্রক থেকে বাদ পড়ার কোনও খবর জানানো হয় না। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দিল্লির রেসিডেন্ট কমিশনারের অফিস এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না। কেন্দ্রেরও মুখে কুলুপ।
প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র ভরত ভূষণ বলেন, ‘১৫-১৬টি রাজ্যের ট্যাবলো স্থান পাবে। তবে সেগুলি কোন কোন রাজ্য বলতে পারব না। এই বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রক জড়িত নয়। মন্ত্রকের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটি যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয়।’ তিনি বলেন, ‘তবে এটুকু বলতে পারি, এবারের সাধারণতন্ত্র দিবস হবে পুরোপুরি জনগণের। বন্দে ভারতম নৃত্য উৎসব নামে কর্মসূচিতে জেলা, রাজ্য, আঞ্চলিক স্তরে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত ৪৮০ জন নৃত্যশিল্পী রাজপথে অংশ নেবেন। ফলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব রাজ্যেরই প্রতিনিধিত্ব থাকবে।’
পশ্চিমবঙ্গ বাদ গেলেও বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, এবার যথারীতি থাকছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গুজরাত, হরিয়ানা, গোয়া, কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলি। থাকছে পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, দিল্লির মতো রাজ্যও। উত্তরপ্রদেশ এবার ট্যাবলোয় কাশী করিডর তুলে ধরছে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরাখণ্ডের ট্যাবলো সাজবে কেদারনাথ মন্দিরের কায়দায়। তাহলে কী দোষ করল বাংলা? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তীব্র রাজনৈতিক সংঘাতই কি অন্যতম কারণ? রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।