২২ জানুয়ারি চার পুরসভার নির্বাচন হবে? আজ সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের
আগামী ২২ জানুয়ারি চার পুরসভার নির্বাচন নিয়ে আজ, মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত হতে পারে হাইকোর্টে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছে। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে তাতে। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, ভোট পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত নেই কমিশনের। কোভিড বিধি মেনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য বরং আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতেও তারা প্রস্তুত। এরইমধ্যে তাদের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছে। প্রার্থী এবং দলগুলিকে ডিজিটাল প্রচারে জোর দিতে বলেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। কমিশন প্রথমে জানিয়েছিল, জমায়েত ৫০০ জনে সীমাবদ্ধ রাখলে সভা করা যেতে পারে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় তা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়। ইতিমধ্যে কোভিড বিধি ভাঙার জন্য এক বিধায়ক সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা আইন মোতাবেক রাজনৈতিক দলের বহু প্রার্থী ও কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই সব তথ্যেরই উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়।
ঝুলে থাকা ভোটভাগ্যের মধ্যে অবশ্য প্রস্তুতিতে খামতি নেই পুলিস-প্রশাসনের। সোমবারই রাজ্য পুলিসের পক্ষ থেকে বুথের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে কমিশনে। তাতে প্রত্যেক বুথে ন্যূনতম একজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী রাখার কথা জানিয়েছে পুলিস। ভোটমুখী চার পুরসভায় বুথের সংখ্যা ২ হাজার ৭৮টি। তার মধ্যে আসানসোলে ১ হাজার ২০, শিলিগুড়িতে ৪২১, চন্দননগরে ১৬৯ এবং বিধাননগরে বুথ রয়েছে ৪৬৮টি। প্রত্যেক বুথেই রাজ্য সশস্ত্র পুলিস বাহিনী রাখা হবে। এছাড়াও কুইক রেসপন্স টিম, আরটি মোবাইল, সেক্টর অফিসে রাখা থাকবে পুলিস বাহিনী। সব ঠিকঠাক থাকলে ২২ জানুয়ারির পুরভোটে মোট ন’হাজার পুলিসকর্মী মোতায়েন থাকবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।
তবে সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে কমিশনের কর্তারা বেশ উদ্বিগ্ন। চন্দননগরের মহকুমা শাসক তো বটেই, এছাড়াও এসডিও অফিসের বহু কর্মী-আধিকারিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বাইরে থেকে কর্মী-অফিসার এনে ভোট করাতে হচ্ছে। পর্যবেক্ষকরাও করোনায় সংক্রামিত। কোভিড হানা দিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটেও। এই পুর এলাকায় করোনা আক্রান্ত বহু প্রার্থী, বিধায়ক বা মন্ত্রীও। এই অবস্থায় ভোটের সম্ভাবনা নিয়ে তাই পর্যালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
এখন নজরে রয়েছে চারটি পুর এলাকায় সংক্রমণের গ্রাফ। চলতি ঢেউ মারণ রূপ না দেখালেও করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ খতিয়ে দেখছে আদালত। আজ শুনানিতে এই বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ধারণা। সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে সব পক্ষ। তবে সূত্রের খবর, কমিশন কখনওই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ভোট বন্ধ করার পক্ষে মত দেবে না। এ ব্যাপারে কমিশনের বক্তব্য, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাজ ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আদালতের নির্দেশেই ২২ জানুয়ারির দিনটি চূড়ান্ত হয়েছে। এবং কমিশন সবরকমভাবে প্রস্তুত রয়েছে নির্বাচন পরিচালনায়। কোভিড বিধি কঠোরভাবে পালনের জন্য রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থাই নিচ্ছে।