অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার মডেলের ভূয়সী প্রশংসা মুকুল রায়ের
এক সময়ে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ অনেকেই ঘরোয়া আলোচনায় বলতেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই দিদি তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। বিচ্ছেদ ও দলত্যাগের মূলে ছিল সেটাই। শুধু কি তাই! ধর্মতলার বিজেপি মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে মুকুলের আক্রমণ, তা নিয়ে পাল্টা মামলা ইত্যাদি ইতিহাসও এখনও ফিকে হয়নি।
সেই তিনি মুকুল রায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি টুইট করলেন। এবং তাতে ভূয়সী প্রশংসা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
উলোটপুরাণ নয়?
কী লিখেছেন মুকুলবাবু?
ডায়মন্ড হারবারে কোভিডের সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য গত শনিবার জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। ওই বৈঠকে তাঁর পৌরোহিত্যেই স্থির হয়েছিল, ডায়মন্ড হারবারে কঠোর ভাবে কোভিড নিয়ন্ত্রণ বিধি বলবৎ করা হবে। যেমন বাজারে গেলে ক্রেতা বিক্রেতা দুজনকেই দুটো করে মাস্ক পরতে হবে ইত্যাদি। তা ছাড়া আরও বেশি সংখ্যায় কোভিড কন্ট্রোল রুম খোলা, ভ্রাম্যমান চিকিৎসকের বন্দোবস্ত ইত্যাদি ঘোষণাও করেছিলেন অভিষেক।
অভিষেকের এহেন ঘোষণা নিয়ে আবার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে দ্বিবিধ প্রশ্ন উঠেছিল। এক, এক জন সাংসদ কি এভাবে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়ে কোভিড বিধি লাগু করাতে পারেন? কারণ, নবান্ন যে নির্দেশ দিয়েছে তার অতিরিক্ত নিদান দিয়েছেন অভিষেক। এবং দুই, তা হলে কি তৃণমূলে এখন দুটো ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরি হয়েছে?—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়?
পরিস্থিতি যখন এমনই তখন মুকুলবাবু এদিন টুইটে লিখেছেন, “কঠোর বিধি নিষেধ প্রয়োগ করে বা কন্ট্রোল রুম খুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিজের এলাকার মানুষের যে ভাবে যত্ন নিচ্ছেন তা দেখে ভাল লাগছে। মানুষকে সুরাহা দেওয়ার উদ্দেশে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষমতা প্রশংসাযোগ্য”। টুইটে ডায়মন্ড হারবার মডেল বলে হ্যাশট্যাগও দিয়েছেন মুকুলবাবু।
বলে রাখা ভাল, ইদানীং মুকুলবাবু বেশ কয়েকটি দলীয় কর্মসূচিতে কখনও তৃণমূলের জায়গায় বিজেপি বলেছেন, তো কখনও বিজেপির জায়গায় তৃণমূল! যা নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে তাঁর ঘনিষ্ঠ জনেদের অনেকেই বলছেন, সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ইমব্যালেন্স হচ্ছে সম্ভবত! তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এদিনের টুইটে ভারসাম্যের কোনও অভাব দেখা যায়নি। বরং টুইট দেখে কারও কারও মনে হতে পারে দুই বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে অসামান্য ভারসাম্য রেখে চলারই বার্তা দিচ্ছেন মুকুলবাবু।