চলতি ঢেউয়ে বাংলায় এক শতাংশ করোনা রোগীরও দরকার পড়ছে না অক্সিজেন
চলতি ঢেউয়ে মাত্র এক শতাংশ করোনা রোগীরও দরকার পড়ছে না অক্সিজেন। মাস কয়েক আগেও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কাড়াকাড়ি অবস্থা ছিল, সেখানে বর্তমানে ৯৯ শতাংশ রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজনই পড়ছে না। ফলে রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদাও দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৩০০ টন। এমনকী, দ্বিতীয় ও চলতি ঢেউ—মহামারীর এই দুই পর্বের মধ্যবর্তী সময়কালে যে পরিমাণ অক্সিজেনের চাহিদা ছিল, এখন প্রয়োজন পড়ছে তার থেকেও কম। মাস কয়েক আগে হাসপাতালগুলিকে অক্সিজেনে স্বাবলম্বী করতে পিএসএ প্লান্ট বসানো শুরু হয়েছিল। অক্সিজেন সরবরাহকারী বিভিন্ন সংস্থা সূত্রে খবর, চলতি ঢেউয়ে পিএসএ প্লান্টের মাধ্যমে অক্সিজেনের চাহিদাও কমেছে।ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাসের প্রভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফুসফুসের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, লাং ফেলিওর, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রম (এআরডিএস) সহ মারাত্মক অসুখে আক্রান্ত হচ্ছিলেন করোনা সংক্রামিত রোগীরা। রিব্রিদার মাস্ক, এমনকী হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন চালিয়েও আশঙ্কাজনক করোনা রোগী সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। নানা কার্যকারিতার ভেন্টিলেটর কিনে তীব্র অক্সিজেন সঙ্কট মেটানোর চেষ্টা চলছিল।
রাজ্যের প্রধান অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘২০২১ সালের মে-জুন মাসে রোজ অক্সিজেন লাগত প্রায় ৪০০ টন। হাসপাতালগুলিতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে ১২০ টন ও ট্যাঙ্কে লিক্যুইড অক্সিজেন যেত প্রায় ২৫০-২৮০ টন। সেখানে চলতি ঢেউয়ে প্রতিদিন বাংলায় সিলিন্ডার (৩৫-৩৮ টন) ও লিক্যুইড অক্সিজেন (৬২-৬৫ টন) মিলিয়ে প্রয়োজন পড়ছে মাত্র ১০০ টনের। অর্থাৎ, চার ভাগের এক ভাগও নয়। তবে শুধু করোনা রোগীর সংখ্যা হ্রাসই নয়, হাসপাতালে ভর্তি ও প্ল্যানড অপারেশন কমে যাওয়াও এর কারণ। কোভিড টাস্ক ফোর্সের ডাঃ জ্যোতির্ময় পাল ও সংক্রামক রোগ চিকিৎসক ডাঃ যোগিরাজ রায় এক সুরে বলেন, ‘এখন ১ শতাংশ করোনা রোগীরও দরকার পড়ছে না অক্সিজেন। বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে বিশ্রাম নিয়েই সুস্থ হচ্ছেন।’