বাবুঘাটে সরকারি ব্যবস্থপনায় খুশি গঙ্গাসাগরে যাওয়া ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীরা
ভিন রাজ্যের তীর্থযাত্রীরা এবার গঙ্গাসাগরে আসা নিয়ে দোলাচলে ছিলেন। শেষপর্যন্ত মেলা হবে কি না, সেই খবরে চোখ রাখছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু কলকাতার বাবুঘাটে ট্রানজিট পয়েন্টে এসে তাঁদের মনে আর কোনও সংশয় থাকেনি। যানবাহন বা ট্রেন বন্ধ থাকলে কীভাবে পৌঁছবেন সাগরসঙ্গমে বা আদৌ পৌঁছতে পারবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন অনেকে। বাবুঘাটে ঢালাও সরকারি ব্যবস্থপনা দেখার পর তাঁদের সেসব দ্বিধা কেটে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সিতাইপুর থেকে এসেছেন সুনীতা সিং, নির্মলা সিংরা। কেমন লাগছে এখানকার ব্যবস্থাপনা? ‘সব কুছ বড়িয়া হ্যায়’—এক কথায় উত্তর দিলেন হিন্দি বলয়ের দুই নারী।
অনেকেই একাধিক তীর্থদর্শনের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। সেই পথে মকর সংক্রান্তিতে সাগরস্নানের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। মহামারী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেও সাগর মেলার আয়োজন করা হয়েছে, তা দেখে তাঁরা রীতিমতো আপ্লুত। বাবুঘাট সহ সংলগ্ন চত্বরে ভিন রাজ্যের সাগরযাত্রীদের ভিড় নতুন কিছু নয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে নানা পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে। আগে বেশ কিছু ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগই মূলত চোখে পড়ত। এখন সর্বত্র সরকারি ব্যবস্থাপনা। পরিষ্কার শৌচালয়, মাথর উপর শক্তপোক্ত ছাউনি, বাসে তুলে নিরাপদে সাগরে পৌঁছে দেওয়া—এসব ব্যবস্থা মন কেড়েছে সাগরযাত্রীদের। এবার দেখা গেল, করোনার ব্যাপারে সর্বত্র কড়াকড়ি চলছে। টিকার দু’টি ডোজের সার্টিফিকেট দেখে সাগরগামী বাসে তোলা হচ্ছে যাত্রীদের। বাসে যে ক’টি আসন রয়েছে, তত জনকেই ওঠানো হচ্ছে। বাকিরা যাচ্ছেন পরের বাসে।
বিহারের পাটনা, হরিয়ানার পালঘর, উত্তরপ্রদেশের নেপাল সীমান্ত থেকে এসেছেন কমলেশ শর্মা, রাজেন্দ্র সিং সহ অনেকে। কমলেশ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও এত সুন্দর ব্যবস্থাপনা করা যায়, তা না দেখলে বিশ্বাস হতো না। আমরা তো এবার আসতে পারব কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে এখানে এসে সবকিছু দেখে স্বস্তি পেয়েছি। আশা করি, স্নান সেরে ফিরে যেতে কোনও সমস্যা হবে না। রাজেন্দ্র সিং বদ্রীনাথ থেকে ঘুরে কলকাতায় এসেছেন। এখান থেকে সাগরস্নান সেরে তাঁর গন্তব্য কাশী। তিনি বলেন, তীর্থ করার জন্য সরকারের এত উদ্যোগ অন্য কোনও জায়গায় চোখে পড়েনি। বিভিন্ন বিষয়ে বাংলার পাশাপাশি হিন্দিতেও সরকারি ঘোষণাগুলি করায় অনেকের সুবিধা হচ্ছে। তবে বাবুঘাট চত্বরে দেখা গেল, করোনা বা ওমিক্রনে খুব একটা ভয়ডর নেই কারও। নিয়মরক্ষার মাস্ক অনেকেরই থুতনিতে ঝুলছে। তবে পুলিস এলে বা কেউ ছবি তুললে মাস্ক পরে নিতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।