পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি তৃণমূলের
বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি পুরসভায় ২২ জানুয়ারির ভোট চার থেকে ছয় সপ্তাহ স্থগিত রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এজন্য কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে। হাইকোর্টের এহেন নির্দেশের প্রেক্ষিতে এবং করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারও চাইছে, ভোট কমপক্ষে দু’সপ্তাহ পিছিয়ে যাক। এই মর্মে আজ, শনিবার নির্বাচন কমিশনকে পুরদপ্তর চিঠি দিচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। ভোট পিছনোর আর্জি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিচ্ছে শাসক তৃণমূলও। কমিশন সূত্রে খবর, সবদিক খতিয়ে দেখে ভোট পিছনোর বিষয়টিতে এদিন সিলমোহর দেবে তারাও। নবান্নের শীর্ষ স্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
কমিশন আগেই আদালতকে জানিয়েছিল, একবার ঘোষিত হয়ে গেলে, ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। রাজ্য সরকারের তরফে বিপর্যয় বা আপৎকালীন কোনও অবস্থা ঘোষণা করলে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যদিও রাজ্য সরকার সাফ জানিয়েছিল, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেবল কমিশনেরই আছে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, বেঞ্চ কার্যত মামলাকারী ও রাজ্যের সওয়ালকেই এদিন গুরুত্ব দিল। এদিন বেঞ্চ মামলাটির নিষ্পত্তি করে বলেছে, লাফিয়ে বেড়ে চলা কোভিড সংক্রমণের বিষয়টি কমিশনকেই বিবেচনা করতে হবে। ঘোষিত দিনে ভোট হলে তা জনস্বার্থ রক্ষা করবে কি না, তা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে কি না, তা বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি কমিশনকে দেখতে হবে, চার বা ছয় সপ্তাহের জন্য এই উদ্যোগ মুলতুবি রাখা যায় কি না। এ ব্যাপারে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মামলাকারী মনে করলে সাহায্য করতে পারেন।
সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উল্লেখ করে বেঞ্চ মনে করিয়ে দিয়েছে, ভোট করাতে কমিশনকেই শেষ কথা বলতে হয়। সংবিধানই তাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছে। ফলে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আদালত নিজেই সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভোট পিছিয়ে দিক—মামলাকারীর এমন দাবিকে বেঞ্চ গুরুত্ব দেয়নি।