রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

অকাল বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিরা, ক্ষতিপূরণ রাজ্যের

January 16, 2022 | 2 min read

ডিসেম্বর মাসের শুরুতে অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিদের বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিমা প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করার বর্ধিত শেষদিন ছিল শনিবার। তার আগেই ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণের কাজ শুরু করে দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষি বিমা সংস্থা। উপগ্রহের মাধ্যমে ছবি তুলে ও জমির সামনে গিয়ে এলাকাভিত্তিক ক্ষতি নির্ধারণ করার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর ভিত্তিতেই ক্ষতিপূরণ পাবেন চাষিরা। সদ্য শেষ হওয়া বছরে শস্য বিমা প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রায় ২০ লক্ষ কৃষক ৩৪৭ কোটি টাকা পেয়েছেন। এই খরিফ মরশুমে বন্যার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষতিপূরণের টাকাও খুব শীঘ্রই পেতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি বিমা সংস্থার রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শান্তু দাস। ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। শস্য বিমা প্রকল্পে নথিভুক্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য কোনও আবেদন করতে হয় না। টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়।

মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু করা বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পটি রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন এনেছে। খরিফ ও রবি-বোরো মরশুমে প্রতিটিতে ৫০ লক্ষেরও বেশি কৃষক এতে নাম নথিভুক্ত করেন। এই বিমার সুবিধা নেওয়ার জন্য অধিকাংশ ফসলের ক্ষেত্রে কৃষককে কোনও প্রিমিয়ামের টাকা দিতে হয় না। রাজ্য সরকারই প্রিমিয়ামের টাকা দেয়। শুধু আলু ও আখের ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের অতি সামান্য অংশ কৃষককে দিতে হয়। কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএ-র নিয়মের জন্য ওই দু’টি অর্থকরী ফসলের বিমার প্রিমিয়ামের একটা সামান্য অংশ কৃষককে দিতে হয়।

গত বছর ঘূর্ণিঝড় যশের জন্য রাজ্যে বোরো ধান ও রবি ফসলের ক্ষতি হয়। গত মরশুমের ওই ক্ষতির জন্য প্রায় ১৯ লক্ষ কৃষক মোট ৩০৬ কোটি টাকা বিমা সংস্থার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। খরিফ ফসল ও রবি ফসলের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তিন পর্যায়ে বিমার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযেগে রয়েছে। চাষ শুরু করার আগে, চাষের মরশুমের মাঝখানে ও মরশুমের শেষে ক্ষতি হলে টাকা পাওয়া যায়। এবার খরিফ মরশুমে ধান চাষ শুরু হওয়ার আগে তিনটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৯৫ হাজার কৃষক মোট প্রায় ৪১ কোটি টাকা ক্ষতিপুরণ পেয়েছেন। চাষ শুরু হওয়ার পর বন্যায় ৯টি জেলায় ধান চাষের ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। মরশুমের একেবারে শেষ দিকে অতি বর্ষণে ধানের যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা। কারণ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফসল তোলার সময়সীমা ছিল।

আলুর ক্ষেত্রেও বীজ লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে অতি বৃষ্টিতে যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাতে ক্ষতিপূরণ মিলবে। ক্ষতির পর বিমায় নাম নথিভুক্ত করে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ ছিল। তাই অতি বর্ষণের পর আলুচাষিদের নাম বিমায় অন্তর্ভুক্ত করার উপর বিশেষ উদ্যোগ নেয় কৃষিদপ্তর। নাম অন্তর্ভুক্ত করার সময় ১৫ দিন বৃদ্ধি করা হয়। গত বছর প্রায় ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার আলুচাষি বিমা করিয়েছিলেন। এবার সেই সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছে বিমা সংস্থা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #State Government, #potato farmers

আরো দেখুন