ইউপিতে আসন্ন ভোটে অখিলেশকে সমর্থন কিষান মোর্চার, প্রবল চাপে যোগী সরকার
উত্তরপ্রদেশে ক্রমেই ফিকে হচ্ছে গেরুয়া। কাজ হচ্ছে না ‘মোদী-ম্যাজিক’ কিংবা মথুরা, কাশীর নামেও। উল্টে, বিজেপি সহ বৃহত্তর এনডিএ’র শরিক দলগুলির ‘রক্তক্ষরণ’ চলছেই। রবিবারও গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করে সাইকেলে চেপে বসলেন যোগী সরকারের প্রাক্তন বনমন্ত্রী দারা সিং চৌহান। তাঁর সঙ্গেই সমাজবাদী পার্টি (সপা)’তে যোগ দিলেন বিজেপির শরিক আপনা দল (সোনেলাল)-এর বিধায়ক আর কে ভার্মা। এদিকে, নয়ডাতে কোভিডের বিধি-নিষেধ অমান্য করার অভিযোগে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল উত্তরপ্রদেশ পুলিস। এদিন তিনি একাধিক কংগ্রেস নেতাকে নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে প্রচার চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
চৌহানকে নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে যোগীর মন্ত্রিসভাকে বিদায় জানালেন তিন মন্ত্রী। তিনজনেই যোগ দিয়েছেন সপা’য়। এখানেও থেমে নেই অখিলেশ যাদবের সাইকেল। তাতে সওয়ার হতে উত্তরপ্রদেশের কৃষক সমাজের কাছে আর্জি রেখেছেন ভারতীয় কিষান মোর্চার সভাপতি নরেশ টিকায়েত। তিনি বলেছেন, ‘বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিতে আসন্ন ভোটে কৃষকরা সপা ও আরএলডি জোটের প্রার্থীদেরকেই সমর্থন করবেন।’ দলের এমন দৈন্যদশার মধ্যে এদিন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার তথা কানপুরের প্রাক্তন কমিশনার অসীম অরুণকে যোগদান করিয়ে মুখরক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে, তাতেও ভাঙন ঠেকানো যাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, যোগী সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির দলিত ও ওবিসি নেতা-মন্ত্রীদের সিংহভাগই বেজায় ক্ষুব্ধ। অখিলেশ যাদবও এদিন চৌহান ও ভার্মাকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, ‘ডবল ইঞ্জিনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমরা সবাই এককাট্টা। কারণ, ওরা ভেঙে ফেলার রাজনীতি করে। আমরা গড়ে তোলার রাজনীতি করি।’
মন্ত্রীর পাশাপাশি দারা সিং চৌহান বিজেপির ওবিসি মোর্চার শীর্ষনেতা ছিলেন। যোগীর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বুধবার। এদিন চৌহান বলেছেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশের স্লোগান তুলে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কুর্সিতে বসে তাদের ভোল পাল্টে যায়। মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর উন্নয়ন ছাড়া কিছুই করেনি ওরা। বাকিদের উন্নয়ন ভবিষ্যৎ ভাগ্যের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিল বিজেপি। এমন কথা খেলাপি দলের সঙ্গে থাকা যায় না।’ সেই সঙ্গে মধুবন কেন্দ্রের বিধায়কের দাবি, উত্তরপ্রদেশে ওবিসি ও দলিত সম্প্রদায় জোট বেঁধে বিজেপিকে শিক্ষা দিতে তৈরি হচ্ছে। আরও একবার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন অখিলেশ যাদব।’
সঙ্গতকারণেই সপা’র এই শক্তিবৃদ্ধিতে স্নায়ুর চাপ বাড়ছে মোদী, যোগী, নাড্ডাদের। তবে কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে সপা’র বিরুদ্ধে অল আউট ঝাঁপিয়েছে তারা। এদিনই লখনউয়ে দলের সদর দপ্তরে অরুণের যোগদান অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি বলেছেন, ‘সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী তালিকায় একবার চোখ বুলিয়ে দেখুন, শুরুটা জেল আর শেষটা বেল দিয়ে। অর্থাৎ, তালিকার প্রথম নামটা জেলবন্দির। শেষের নামটা জামিনে ছাড়া পাওয়া ব্যক্তির। উদাহরণ হিসেব তিনি তুলে ধরেন কৈরানা কেন্দ্রের সপা প্রার্থী নাহিদ হাসানের নাম। সম্প্রতি একটি ফৌজদারি মামলায় হাসানের জেল হেফাজত হয়। অনুরাগ বলেছেন, ‘হিংসা, অশান্তির কারিগররাই সপাতে যাচ্ছে। একমাত্র স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোকেরাই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। আজকের এই যোগদান কর্মসূচি তারই প্রমাণ।’