দেশে সব প্রাপ্তবয়স্করা এখনও পায়নি প্রথম ডোজ, প্রশ্নের মুখে মোদীর টিকাকরণের বর্ষপূর্তি
মাত্র ১১ মাসে ভ্যাকসিন আবিষ্কার। এক বছরে ১৫৬ কোটিরও বেশি ডোজ। ভ্যাকসিনের বর্ষপূর্তিতে রবিবার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দিনভর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগের ঢাক পেটানো চলল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এখনও পর্যন্ত সব প্রাপ্তবয়ষ্ক কেন কোভিডের টিকা পেল না? সেই জবাব দিতে নারাজ স্বাস্থ্যমন্ত্রক। উল্টে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার দায় কেন্দ্র সরাসরি চাপিয়েছে রাজ্যগুলির ঘাড়ে। বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিনের ডোজের অভাব নেই। রাজ্যগুলির কাছে এখনও ১৪ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪হাজার ৬৪১টি ডোজ পড়ে আছে। সেগুলি সময় মতো দিয়ে দিলে কবেই সব প্রাপ্তবয়ষ্ক কোভিডের টিকা পেয়ে যেতেন।
দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও প্রায় ১২ কোটি নাগরিক তা নেননি। তাই তাঁদের দ্রুত খুঁজে বের করে ডবল ডোজ সম্পূর্ণ করতে রাজ্যকে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। দেশে ১৮ ঊর্ধ্ব ৯৪ কোটি ৪৭ লক্ষ ৯ হাজার ৫৯৬ জনকে কোভিডের টিকা দেওয়া হবে। ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণের কাজ শুরু হয়।
টিকাকরণের গতিবিধি এবং বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগাতে পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সবাইকে টিকা দেওয়ার টার্গেটের কথা জানায় মোদী সরকার। কিন্তু বুস্টার ডোজ, ১৫-১৭ বছর বয়সিদের টিকাকরণ শুরু হলেও প্রাপ্তবয়ষ্কদের ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
তবে কি এবার নতুন টার্গেট ২৬ জানুয়ারি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিব পর্যায়ের এক আমলা বলেন, আমরা কোনওদিনও কোনও দিনক্ষণের টার্গেট রাখিনি। যা বলেছিলেন, মন্ত্রীরা। আমরা স্রেফ রাজ্যগুলিকে বলেছি, যত দ্রুত সম্ভব সব প্রাপ্তবয়ষ্ককে টিকা লাগান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিঙ্গল ডোজ দেওয়া হয়েছে ৯৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়ষ্ককে। ডবল ডোজ পেয়েছেন ৬৯.৮ শতাংশ।
কোভিড টিকাকরণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আইসিএমআরে’র একটি পাঁচ টাকার ডাকটিকিট প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমাদের দেশে ভ্যাকসিন তৈরিতে ন’ থেকে ১০ বছর সময় লাগত। কিন্তু মোদীজির উদ্যোগে আমাদের বিজ্ঞানীরা মাত্র ১১ মাসেই দেশীয় টিকা আবিষ্কার করেছেন।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ট্যুইট করে বলেছেন, ‘টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে আমার কুর্নিশ।’ যদিও কতদিনে হবে সম্পূর্ণ টিকাকরণ— তা নিয়ে কেউই রা কাটেননি।