ভোটের আগে কোন জাদুতে করোনা গ্রাফ হঠাৎ নিম্নমুখী যোগীরাজ্যে?
উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) বিধানসভা নির্বাচনকেই কি করোনা ভাইরাস (Coronavirus) ভয় পেয়ে গেল? নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হয়ে গিয়েছে। তার থেকেও বেশি যা নজরে এসেছে, তা হল উত্তরপ্রদেশের করোনা মুক্তি তথা রিকভারি রেটের পরিসংখ্যান। প্রথম দফায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের যে সমস্ত জেলায় নির্বাচন রয়েছে তার মধ্যে তিন জেলা মেরঠ, গাজিয়াবাদ এবং নয়ডায় যত জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তার দেড় গুণ মানুষ করোনা মুক্ত হয়েছেন।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত মেরঠের মতো জেলা ছিল সংক্রমণের নিরিখে উপরের সারিতে। এখন সেখানে রিকভারি রেট ১৫০ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি দুই জেলাতে রিকভারি রেট ১৫০ ছাপিয়ে গিয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে পাঁচদিনের মধ্যেই পুরো উত্তরপ্রদেশের করোনা রিকভারি রেট ৫ শতাংশ থেকে ৭৯ শতাংশ হয়ে গিয়েছে! টিকাকরণ নাকি অন্য কোনও ‘জাদু’, উঠছে প্রশ্ন।
উত্তরপ্রদেশের বাকি জেলাগুলিতেও রিকভারি রেট হু হু করে বাড়ছে। এইভাবে দ্রুতগতিতে রিকভারি রেট বাড়তে থাকলে সেখানে ভোট পর্ব শুরু হওয়ার আগেই করোনার তৃতীয় তরঙ্গ নিশ্চিতভাবে শেষ হয়ে যাবে। আগামী ২৩ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্বাচনী জনসভা, রোড শো, বাইক রালির মতো বিষয়গুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা হবে। উত্তরপ্রদেশে যেভাবে রিকভারি রেট বাড়ছে তাতে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০২০ সাল থেকে দেশে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গে যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে তাতে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধির ছবিই বারবার উঠে এসেছে। উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রে তার উলট পুরাণই হচ্ছে বলা চলে। রিকভারি রেটের বাড়বাড়ন্তের পিছনে প্রচারের ক্ষেত্রে কমিশনের কড়াকড়ি, টিকাকরণ নাকি রাজ্যের যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) সরকারের ব্যবস্থাপনা–কার কৃতিত্ব সেটাই দেখার।
এদিকে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জোরকদমে বৈঠক চলছে বিজেপির অন্দরে। সোমবার থেকে যোগী দিল্লিতে রয়েছেন। মঙ্গলবার মাত্র দু’জনের নাম প্রকাশ করেছে বিজেপি। প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। একই পরিবার থেকে দু’জনকে টিকিট দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। তাতে বেজায় চটেছেন এলাহাবাদের বিজেপি সাংসদ রীতা বহুগুণা যোশী। ছেলে ময়ঙ্কের জন্য লখনউ ক্যান্টনমেন্ট আসনের টিকিট চান তিনি। ২০১৭ সালে লখনউ (ক্যান্ট) থেকে বিধানসভায় জিতেছিলেন রীতা। ২০১৯ সালে লোকসভায় জেতার পর বিধানসভা আসনটি তাঁর হাতছাড়া হয়। তখন থেকেই ছেলের জন্য আসনটির দিকে চোখ রয়েছে রীতার। কিন্তু একই পরিবারের দু’জনকে টিকিট নয়–এই নীতিই রীতার বাধা হয়ে উঠেছে।