ভেজাল নুন পরীক্ষায় উদ্যোগী রাজ্য, জেলায় জেলায় সংগ্রহ করা হল নমুনা
মস্তিষ্ক গঠন হয়নি ঠিকমতো। বেশ কিছু শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল এই সমস্যা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেই শিশুর শরীরের সরেজমিনে তদন্ত করার পর দেখা যায়, শৈশব থেকে যে তারা নুন খেয়েছে তাতে আয়োডিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল না। এমন ঘটনা বাংলায় আকছার ঘটছে। তাই ভেজাল নুন ধরতে তাই উদ্যোগী হল স্বাস্থ্য দপ্তর।
সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে নুনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, নন্দীগ্রামে মুদির দোকানে প্রচুর ভেজাল নুন বিক্রি হচ্ছে। ভেজাল নুন ধরতে ২০১৮ সালেই জারি করা হয়েছিল নির্দেশিকা।
তবে দেখা গিয়েছে অসাধু দোকানিরা দোকানে যে দোকান রাখছেন নমুনা হিসেবে তা পাঠাচ্ছেন না। ঠিক হয়েছে, এবার ভেজাল নুন ধরতে সরাসরি দোকান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে পরীক্ষার জন্য। এর জন্য প্রতি মাসে রাজ্যের প্রতিটি ব্লক থেকে ২০টি করে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
ডিসেম্বর মাসে ১৪টি জেলা থেকে নুনের ১২৮টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তার মধ্যে ২৬টি নমুনায় নুনের গুণগত মান খারাপ। সবথেকে খারাপ নুন মিলেছে পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূমের রামপুরহাট ও মুর্শিদাবাদে। এরপরই ভেজাল নুন ধরতে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
রাজ্যের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই বলেন, “আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য আয়োডিন প্রয়োজন। থাইরয়েড হরমোনের একটি অপরিহার্য উপাদান এই আয়োডিন। বাজেয়াপ্ত ভেজাল নুনে সঠিক পরিমাণে আয়োডিন নেই।”
কীভাবে বোঝা যায় আয়োডিনের মাত্রা কম?
দোকানের নুনে যদি পিপিএম(পার্টস পার মিলিয়ন) ১৫ এর কম থাকে তবে বুঝতে হবে আয়োডিনের মাত্রা সঠিক নেই। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, সাধারণত সস্তা অথবা খোলা নুনে এমন সম্ভাবনা দেখা যায়।
ডা. ঘটকের কথায়, “রান্নায় ব্যবহৃত নুনে আয়োডিনের মাত্রা কম থাকলে, দীর্ঘদিন ধরে তা গ্রহণ করলে নানা সমস্যার শিকার হন বাসিন্দারা।” চিকিৎসকের বক্তব্য, “আয়োডিন যদি শৈশব থেকেই শরীরে সঠিক মাত্রায় না যায়, তাহলে মানুষ গলগণ্ড, কমবুদ্ধি, চোখের সমস্যার সৃষ্টি হয়।”