দিল্লিতে বাতিল সুভাষ ট্যাবলো, ২৩ জানুয়ারি নেতাজি বন্দনার প্রস্তুতিতে বিপাকে বঙ্গ বিজেপি
করোনা আবহে রাজ্যবাসীকে সাহায্যের হাত বাড়াতে বিজেপির ব্যানারে তৈরি হয়েছিল ‘বিবেক বাহিনী’। বঙ্গ পার্টির যুব ব্রিগেডের পরিচালনায় তৈরি হওয়া এই বাহিনীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের একাংশ নেতার দাবি, যে নম্বরে ফোন করে সাহায্য প্রার্থনার বার্তা দেওয়া হয়েছিল, অধিকাংশ সময়ই তা বেজে যায়। শুধু তাই নয়, করোনা আক্রান্ত রোগীরা ফোন করে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলতে পারবেন, বলেও যুব মোর্চার তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করলে আনকোরা কিছু যুবক তাতে সাড়া দিচ্ছে। কোনও করোনা রোগী চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে, তাঁকে বলা হচ্ছে, আপনি একটু অপেক্ষা করুন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর ফোনটি এরপর কেটে যাচ্ছে। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে স্বামী বিবেকানন্দের নাম জড়িয়ে বঙ্গবাসী সেবায় নেমেছিল যুব মোর্চা, তাতে বড়সড় গলদ ধরা পড়ছে। শুধু তাই নয়, দলের শীর্ষ রাজ্য নেতাদের নির্দেশ ছিল, সমস্ত বিধায়ককে এই কর্মসূচির সাথে যুক্ত করতে হবে। কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গেলেও, অধিকাংশ বিধায়কই এই বিবেক বাহিনীর শরিক হননি বলে দলীয় সূত্রে দাবি। এ বিষয়ে যুব মোর্চার শীর্ষ নেতারা রাজ্য পার্টির কাছে বারবার অভিযোগ করলেও, তার কোনো সুরাহা মিলেনি। গোটা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি ইন্দ্রনীল খাকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এদিকে স্বামী বিবেকানন্দের পর এবার নেতাজি সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে মাঠে নামছে গেরুয়া পার্টি। দিল্লির কুচকাওয়াজে বাংলার নেতাজির ট্যাবলোকে বাদ দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে আগামী ২৩ জানুয়ারি সাড়ম্বরে সুভাষ বন্দনায় নামতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। বৃহস্পতিবার দলের শীর্ষ নেতারা এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হন। সেখানেই রাজ্য সভাপতির সুকান্ত মজুমদার বলেন, নেতাজিকে নিয়ে আমাদের দল সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। ২৩ জানুয়ারি রাজ্যের সমস্ত ব্লকে নেতাজির প্রতি সম্মান জানিয়ে কর্মসূচি পালন করে এর উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। সেই সূত্রেই, বঙ্গ পার্টির ১২৬৫টি মণ্ডলে নেতাজি জন্ম জয়ন্তী পালনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। বর্তমানে রাজ্য বিজেপিতে কোন্দল যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে এই কর্মসূচির কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ দলেরই একাংশের। কারণ এখনও পর্যন্ত দলের ৪২টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি তৈরি হয়নি। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সংগঠন বি এল সন্তোষ ১০ জানুয়ারির মধ্যে এই কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য কমিটি গঠন এবং জেলা সভাপতি নিয়োগ ঘিরে দলে বিদ্রোহ চলছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আপাতত ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন রাজ্য নেতৃত্ব। ফলে ব্লকে কিংবা জেলায় কীভাবে নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালন হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন গেরুয়া ব্রিগেডে!