নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলিতে বেকারত্ব বেড়েছে, বরুনের মন্তব্যে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির
নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলিতে বেকারত্ব বেড়েছে বলে মন্তব্য করে ভোটের মুখে নিজের দল বিজেপিকেই বিপাকে ফেললেন উত্তরপ্রদেশের সাংসদ বরুণ গান্ধী।
আজ একটি সর্বভারতীয় পত্রিকায় নিজের একটি লেখা উল্লেখ করে বরুণ গাঁধী টুইটে বলেন, ‘সব ধরনের উন্নয়নমূলক আলোচনা সত্ত্বেও, পরিসংখ্যান বলছে সবকটি ভোটমুখী রাজ্যে বেকারত্ব প্রবল ভাবে বেড়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা লাভের চেষ্টা করার পরিবর্তে আমাদের উচিত চাকরি তৈরির চেষ্টাকে উৎসাহ দেওয়া।’ বরুণ গান্ধী যে ভোটমুখী রাজ্যগুলির কথা বলেছেন তার মধ্যে এক মাত্র পঞ্জাব ছাড়া বাকি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরে বিজেপির সরকার রয়েছে। নরেন্দ্র মোদীকে সম্প্রতি উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্য ও কেন্দ্রে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের তত্ত্বের উপরে জোর দিয়ে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু মোদী সরকারের সেই তত্ত্বের সারবত্তা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বরুণ। তাঁর কথায়, মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। বেকারত্ব দ্রুত বাড়ছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)-র পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশের তথ্য তুলে ধরে তিনি দাবি করেছেন, গত পাঁচ বছরে যোগী রাজ্যে কর্মক্ষম ব্যক্তির সংখ্যা ১৫ কোটি থেকে বেড়ে ১৭ কোটি হয়েছে। কিন্তু ওই সময়ে চাকুরিপ্রাপকদের সংখ্যা ৩৮.৫ শতাংশ থেকে কমে ৩২.৮ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ লোক বাড়লেও চাকরি কমেছে। বরুণ লিখেছেন, গত ডিসেম্বরে দেশে কর্মহীনের হার ছিল ৭.৯ শতাংশ, যা আগের চার মাসের নিরিখে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে শহুরে এলাকায় কর্মহীনের হার ছিল ৯.৩ শতাংশ, যার কারণ হিসাবে অতিমারির আবহে কেন্দ্রের হতাশাজনক অর্থনীতিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
বরুণ গান্ধী যে ভাবে নিজের সরকারের অর্থনীতিকে আক্রমণ করেছেন, তাকে সমর্থন করেছেন বিরোধীরাও। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, মোদী সরকারের আমলে অর্থনীতি, কাজের সুযোগ যে তলানিতে এসে ঠেকেছে তা এত দিন বিরোধীরা বলে আসছিলেন। এ বার সেই সত্যিই তুলে ধরলেন বিজেপি সাংসদ বরুণ। এসপি-র দাবি, যোগী সরকারের আমলে উত্তরপ্রদেশের যুব সমাজ যে চরম বেকারত্বের মুখে পড়েছে তাই স্পষ্ট করে দিলেন বরুণ। বিশেষ করে ভোটের আগে ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্যগুলির আর্থিক পরিস্থিতি বেহাল দশা তুলে ধরায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিজেপি-শাসনের সুফল নিয়ে। সব মিলিয়ে বরুণ কাঁটায় ভোটের মুখে প্রবল অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই কার্যনির্বাহী সমিতি থেকে বাদ গিয়েছেন তিনি। বাদ পড়েছেন উত্তরপ্রদেশে দলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও। দলের এক নেতার কথায়, দলের সঙ্গে বরুণের সম্পর্ক এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।