তৎপর রাজ্য প্রশাসন, ‘সিল’ করল দেউচা-পাঁচামি এলাকায় বেআইনি দুই পাথর খাদান
প্রস্তাবিত দেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি এলাকায় দু’টি পাথর খাদান বন্ধ করে দিল জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সন্ধেয় দেওয়ানগঞ্জ ও সাগরবান্দি এলাকার দু’টি খাদানের অফিস সিল করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের তরফ থেকে প্রশাসনিক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানান হয়। তবে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এলাকাবাসীর মধ্যে।
শুক্রবার সন্ধেয় দেওয়ানগঞ্জ এবং সাগরবান্দি এলাকার দুটি খাদান বন্ধ করে দেয় প্রশাসনিক কর্তারা। প্রশাসনের অভিযোগ ওই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর তুলে বিক্রি করা হচ্ছিল। যদিও এলাকাবাসীর দাবি, স্থানীয় আদিবাসী যুবকদের তত্বাবধানে দু’টি খাদানে পাথর তোলা হচ্ছিল। বাসিন্দারা চান পাথরও উঠুক, কয়লা খনিও হোক। তাঁরা সকলেই প্রস্তাবিত খনির জন্য জমি দিতে কাগজে সই করেছেন বলে জানিয়েছেন। তারপরেও কেন এই সিদ্ধান্ত, উঠছে প্রশ্ন।
খাদান দু’টির দায়িত্বে থাকা সারতাজ মোল্লা ওরফে বাপ্পা জানান, খাদান মালিক আল আমিন হক প্রয়াত হওয়ার পরে গত ২০১৬ সাল থেকে তিনি খাদানটি চালাচ্ছেন। তাঁর দাবি, খাদানে এলাকার আদিবাসী যুবকেরা কাজ করে। এলাকার ১৩০ ঘরে প্রতি সপ্তাহে খাদানের লভ্যাংশ পাঠান হয়। বাপ্পাবাবু আরও জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর প্রশাসন নির্দেশ দেয় খাদান বন্ধ রাখার। তখন থেকেই পাথর উত্তোলন বন্ধ। তার পরে কেন অফিস সিল করা হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
তৃণমূলের আদিবাসী নেতা তথা জেলা সাধারন সম্পাদক সুনীল সোরেন জানান, “কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও খনি বিষয়ক মন্ত্রক থেকে এই ধরনের খাদান চালানোর ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছে। তাঁরা এলাকায় এসে সরজেমিনে তদন্ত করে গিয়েছে। তাই কয়লা শিল্প শুরুর আগে থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নেওয়া শুরু হল।” জেলাশাসক বিধান রায় জানান, “ওই দুটি পাথর খাদান অবৈধভাবে চলছিল। পাথর উত্তোলনের কোনও বৈধ কাগজ তাদের কাছে ছিল না। তাই দুটি খাদান বন্ধ করে দেওয়া হল।” যদিও খাদান বন্ধ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার জেলা সম্পাদক রবীন সোরেন জানান, “তালবাধ এলাকায় কমবেশি ৩০টি ওই ধরনের খাদান আছে। তাদের যে কাগজের ভিত্তিতে পাথর তোলা হয়, সেই কাগজেই এই দুটি চলছিল। বাকিদের ক্ষেত্রেও প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয় দেখার অপেক্ষায় আছি।”