নেতাজির মূর্তি বসিয়ে ট্যাবলো বাতিলের ড্যামেজ কন্ট্রোলে মোদী সরকার?
বিগত এক বছর ধরে নীরব থাকার পর নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর শেষ লগ্নে দিল্লিতে তাঁর মূর্তি বসানোর কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার টুইট মারফত মোদির এই ঘোষণায় শুরু হয়েছে নয়া সমালোচনার ঝড়। রাজ্যের বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মোদির এই ঘোষণাকে ‘চমক’ আখ্যা দিয়েছে। পাশাপাশি সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে নেতাজির উপর তৈরি রাজ্যের ট্যাবলো বাতিলের পাপ করেছেন মোদি। এখন এই ঘোষণা করে মানুষের ক্ষোভ চাপা দিতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছে তারা। অন্যদিকে, নেতাজির পরিবার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সুভাষচন্দ্রের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শকে দেশ পরিচালনার ভিত করার দাবি তুলেছে।
এদিন তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, কেন্দ্রে এতদিন একটা সাম্প্রদায়িক সরকার ছিল জানতাম। এখন দেখছি এটা একটা পাগলের সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতবার বলার পর সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে নেতাজিকে নিয়ে তৈরি বাংলার ট্যাবলোর অনুমতি দিচ্ছে না। এনিয়ে সর্বত্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। এখন চাপে পড়ে বাপ বলছে কেন্দ্র। আর তা করতে গিয়ে ইন্ডিয়া গেটের সামনে থেকে অমরজ্যোতি জওয়ানের স্মারক সরিয়ে নেতাজির মূর্তি বসানোর কথা ঘোষণা করছে। এসব পাগলামির নামান্তর।
দুই বাম দল সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকও মোদির ঘোষণা নিয়ে মুখর হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, সাধারণতন্ত্র দিবসে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল নিয়ে যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে তা ধামাচাপা দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি পাপস্খালন করতে চাইছেন। আসলে ওঁরা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকেই মুছে দিতে চান। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, মোদি বা তাঁর সরকারের কোনও অধিকার নেই নেতাজির মূর্তি বসিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর। কারণ, এই সরকার আদ্যন্ত সাম্প্রদায়িক এবং কোম্পানিরাজ কায়েমের মনোভাব নিয়ে চলছে। এই দুটি বিষয়ই নেতাজির আদর্শের পরিপন্থী। প্রসঙ্গত, জার্মানিতে থাকাকালীন নেতাজি ‘আজাদ হিন্দ’নামে যে মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করতেন। ফরওয়ার্ড ব্লক তার বাংলা সংকলন আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি এখানে প্রকাশ করবে বলে ঠিক করেছে।