সিপিএম সমর্থকরা ড: কুণাল সরকারকে অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করায় নিন্দায় সরব চিকিৎসক মহল
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ডা. কুণাল সরকারকে (Dr. Kunal Sarkar) অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন তথাকথিত ‘বামপন্থী’ সমর্থকরা। যা দেখে শুনে হতচকিত চিকিৎসকরা। ক্ষুব্ধ, রুষ্ট সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বামপন্থা কখনওই ব্যক্তি আক্রমণকে সমর্থন করে না। এগুলো নোংরামো ছাড়া অন্য কিছু নয়। সিপিএম সমর্থকরা প্রমাণ দিলেন তারা মতাদর্শগত ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন।
কেন এমন আক্রমণ? করোনা বাড়ছিল রাজ্যজুড়ে। সম্প্রতি সংক্রমণে রাশ টানতে আলিপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠক শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কোভিডের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে আগামী দু’মাস কোনও রাজনৈতিক সভা নয়। তাঁর এই চিন্তাভাবনাকে সমর্থন করেছিলেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পালটা চিকিৎসক কুণাল সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখেছিলেন, “ডা: কুণাল সরকার, আপনার গাইডেন্স আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। আসুন এই করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করি। সকলে যাতে সুস্থ থাকে তা সুনিশ্চিত করি।”
চিকিৎসকরা বলছেন পারস্পরিক এই সৌহার্দ্যতাই সিপিএমের গায়ে জ্বালা ধরিয়েছে। যে কারণে পার্থ গুপ্ত নামে এক সিপিএম সমর্থক ফেসবুকে লিখেছেন, কীভাবে তাঁর স্ত্রীর হাত ভেঙে যাওয়ার পর চিকিৎসা বাবদ গাদাগুচ্ছের টাকা চেয়েছিলেন ডা. সরকার। যদিও কার্ডিওথোরাসিক সার্জন কীভাবে হাড়ের চিকিৎসা করে তা ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি চিকিৎসক ডা. শান্তনু সেনের দাবি, অভিযোগের অছিলায় মিথ্যে বদনাম ছড়াতে নেমেছে সিপিএম। তাঁর কথায়, “কিছুদিন আগে মাননীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন ডা. কুণাল সরকার। এই কারণেই সিপিএমের রাগ।” তিনি আরও বলেন, “অন্ধ বিরোধিতা করতে নেমে প্রথিতযশা এক চিকিৎসককে নোংরা কথা বলছে। এমনিই সিপিএমের জনসমর্থন শূন্য। এসব করে তারা সাধারণ মানুষের থেকে আরও দূরে সরে যাচ্ছে।”
সোশ্যায় সাইটে শুধু কার্ডিও থোরাসিক সার্জনের বিরুদ্ধে বিষোদগারই নয়, তাঁর সঙ্গে তুলনা টানা হয়েছে চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের। সিপিএম সমর্থকরা লিখেছেন, “বড় বড় কথা বললেই কেউ মানবিক হয় না। তার জন্য ফুয়াদ হালিম হয়ে জন্মাতে হয়।” যাঁর সঙ্গে চিকিৎসক কুণাল সরকারের তুলনা টানা হয়েছে সেই চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম যদিও জানিয়েছেন, সোশ্যাল সাইটে পোস্টটি এই তিনি দেখেননি৷ তাই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। কিন্তু চিকিৎসক কুণাল সরকার দেখেছেন সেই পোস্ট।
চল্লিশ হাজারের উপর হার্টের অস্ত্রোপচার করা ডা. কুণাল সরকার জানিয়েছেন, এই সমালোচনা অত্যন্ত শিশুসুলভ। ডা. ফুয়াদ হালিমকে অকুন্ঠ শ্রদ্ধা জানিয়ে ডা. সরকার বলেছেন, “ফুয়াদ হালিম খুব ভাল কাজ করছেন। অবশ্যই তা প্রশংসার যোগ্য। আচমকা তার সঙ্গে আমার তুলনা টেনে, যে কাজটা হচ্ছে সেটা নেহাতই ছেলেখেলা।” করোনার এই সময়ে অনেক মানুষের অক্সিজেন প্রয়োজন। কাজ হারিয়েছেন অনেকে। স্কুল বন্ধ বলে কারও লেখাপড়া থমকে। এমন প্রান্তিক মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস প্রয়োজন। সোশ্যাল সাইটে যোগাযোগ করে দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করছেন কেউ কেউ। ডা. কুণাল সরকারের কথায়, “অতিমারীর এ সময়ে এ ধরণের কলুষতা না ছড়িয়ে সোশ্যাল সাইট মানুষের কল্যাণে ব্যবহার হোক। অতিমারি শেষে আমাদের সবাইকেই তো আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। প্রশ্ন উঠবে সমাজের জন্য কী করলাম।”