খরিফ মরশুমে চাষীদের কাছে ধান কেনা নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ বাংলায়
খরিফ মরশুমের প্রথম তিনমাসে সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের আগেই পূরণ হল। খাদ্যদপ্তর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রবিবার পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে ২০ লক্ষ ৬১ হাজার ধান কেনা হয়েছে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে কেনার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তাতে এই তিনমাসে মোট ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার টন ধান কেনার কথা। যে গতিতে কেনার কাজ চলছে তাতে জানুয়ারির শেষে মোট ধান ক্রয়ের পরিমাণ ২৩ লক্ষ টন ছাড়াতে পারে বলে খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা মনে করছেন। সরকারি উদ্যোগে চলতি খরিফ মরশুমে (যা আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে) মোট ৪৯ লক্ষ টন ধান চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি কেনার কথা। এফসিআই-কে এবারও ৬ লক্ষ টন ধান এরাজ্য থেকে কিনতে বলেছে রাজ্য। যদিও এফসিআই প্রতিবছর খুব কম পরিমাণ ধান রাজ্য থেকে কেনে। সরকারের কাছে ধান বিক্রির জন্য নথিভুক্ত চাষির সংখ্যা এবার ২৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এবার নতুন করে আড়াই লক্ষের বেশি চাষি নাম লিখিয়েছেন।
খরিফ মরশুমের প্রথম দিকে সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার গতি কিছুটা মন্থর ছিল। নভেম্বর ও ডিসেম্বরের প্রথম দিকে নতুন ধান কম পরিমাণে ওঠা এটা অন্যতম কারণ ছিল। তাছাড়া চাষির নামে ফড়েদের সরকারের কাছে ধান বিক্রি আটকাতে এবার বেশ কিছু নতুন কড়াকড়ি নেওয়ার জন্য প্রথম দিকে গতি কম ছিল। নতুন ধান প্রচুর পরিমাণে ওঠার পর প্রকৃত চাষিরা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে বেশি সংখ্যায় ধান বিক্রি করতে আসছেন। এবার ধান কেনার কেন্দ্রে ফড়েদের অনেকটাই আটকানো গেলেও ধান কেনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত কোনও কোনও কর্তা মনে করছেন, নজরদারি আরও বাড়ানোর দরকার। বিশেষ করে ক্রয় কেন্দ্রের এক শ্রেণির আধিকারিকের বিরুদ্ধে প্রকৃত চাষিদের ধান বিক্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করার সময় হয়রানি করার অভিযোগ জমা পড়েছে নবান্নেও। দার্জিলিংয়ের মতো জেলায় যেখানে অনেক কম ধান উৎপাদন হয় সেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণে ধান কেনা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
সরকারি উদ্যোগে বেশি ধান কেনা হচ্ছে স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র থেকে। খাদ্যদপ্তর ছাড়াও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম গতবারের থেকে বেশি স্থায়ী কেন্দ্র খুলেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও গ্রামে গিয়ে সরকারের হয়ে ধান কিনছে। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ৭৫ হাজার টনের বেশি ধান কিনেছে।