রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাংলাতেই তৈরি হবে স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক তৈরির কাপড়

January 28, 2022 | 2 min read

স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক তৈরির কাপড় আর বাইরে থেকে আমদানি করা হবে না। সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। তা এখানে তৈরি করেই স্বনির্ভর হবে বাংলা। বছরে অন্তত ছয় কোটি মিটার শুটিং সাটিং-এর কাপড় উৎপাদন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাই রাজ্যজুড়ে বসছে উন্নত মানের পাওয়ার লুম বা যন্ত্রচালিত তাঁত। এদের কাপড় বোনার সুতো সরবরাহ করবে রাজ্য। এবার ন্যূনতম ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির বিনিময়ে এই পাওয়ারলুমগুলিকে সুতো সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য।

এই মর্মে বুধবার একটি অর্ডার বের করে ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্প ও বস্ত্রদপ্তর। সেই অনুযায়ী, মোট দামের মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি নিশ্চিত করলেই পাওয়ার লুম মালিকরা স্কুলপড়ুয়াদের পোশাকের বস্ত্র বোনার সুতো পাবেন। এই অর্ডার ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। আর তা কার্যকর হওয়ার আগের দিন বা মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০০ শতাংশ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দিতে হতো পাওয়ার লুম মালিকদের। এই সুতো সরবরাহের আগে মিল মালিকরা রাজ্য সরকারের অধীন তন্তুজ-র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। যেহেতু ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে, পাওয়ার লুম মালিকদের দেওয়া সুতোর মোট দামের বাকি ৭৫ শতাংশ থাকবে বিমার আওতাধীন। যাতে কোনও কারণে তা নষ্ট হয়ে গেলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির টাকাটাই বিমা কোম্পানি থেকে পাওয়া যায়।

রাজ্যে আরও বেশিসংখ্যক উন্নত মানের পাওয়ার লুম তৈরির উদ্যোগ নিয়ে, আগে যে ইনসেনটিভ স্কিম চালু করেছে তাতে উন্নত মানের পাওয়ারলুম তৈরি করার জন্য জমি কিনলে রেজিস্ট্রি ফি মুকুব করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। লাগবে না স্ট্যাম্প ডিউটিও। রাজ্যের পূর্ব ঘোষিত ইনসেনটিভ স্কিমের পাশাপাশি, কাঁচামাল পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনায় খুশি উন্নত মানের পাওয়ার লুম মালিকরা।
ইনসেনটিভ পাওয়ার পরেও, উন্নত মানের পাওয়ার লুম বসাতে বিপুল খরচ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ১০০ শতাংশ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দিয়ে সুতো কিনতে গেলে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন এই পাওয়ারলুম মালিকরা। গত মঙ্গলবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সমস্ত জেলার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে এই সমস্যার কথা উঠে আসে। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির বিনিময়ে এই পাওয়ার লুম মালিকদের স্কুল পোশাকের প্রয়োজনীয় কাপড় বোনার সুতো দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, রাজ্যে এখন মোট ১৫ হাজার পাওয়ার লুম আছে। কিন্তু তাতে মূলত ধুতি ও শাড়ি বোনা হয়। তাই রাজ্যকে শুটিং সাটিং-এর কাপড় উৎপাদনে স্বনির্ভর হতে গেলে প্রয়োজন রেপিয়ার বা তার থেকেও উন্নত মানের পাওয়ার লুম। আর এই উন্নত মানের পাওয়ার লুম বসানোয়ে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতেই রাজ্য চালু করেছে ইনসেনটিভ স্কিম। এই স্কিমের সহায়তায় এখন প্রায় ৫০০টি পাওয়ার লুম গড়ে উঠছে রাজ্যে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫০টি একেবারে তৈরি। ১০০টি উন্নত মানের পাওয়ার লুমে স্কুলপড়ুয়াদের জন্য প্রায় ২৫০০ মিটার পোশাকের কাপড় ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে।

রাজ্যের লক্ষ্য, এবছর অন্তত ৪০ লক্ষ মিটার বস্ত্র উৎপাদনের। এই উন্নত মানের পাওয়ার লুম ৬০ ইঞ্চি বহরের শুটিং সর্টিং-এর বস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন। সাধারণত ১৫ দিনের সুতো কাঁচামাল হিসেবে সরবরাহ করা হয় পাওয়ার লুমগুলোকে। কিন্তু প্রথমবারে তাদের মোট ৩০ দিনের কাঁচামাল দেওয়া হচ্ছে। কারণ, বোনার আগে অন্তত ১৫ দিন সময় ধরে সুতোটাকে নানান প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। আর প্রথম ধাপে একমাসে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল একবারে সরবরাহ করলে উৎপাদনেও ঘাটতি পড়ে না। এই সুতো তৈরি হয় রাজ্যের সুতোকলগুলিতে। তা দিয়ে বস্ত্রবয়নের পরে স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক তৈরির জন্য তুলে দেওয়া হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #School uniform

আরো দেখুন