রাজ্যপালের স্পিকারকে আক্রমণের বিরুদ্ধে পালটা কটাক্ষ তৃণমূলের
সংসদে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সাঁড়াশি আক্রমণের কৌশলে রাজ্য বিধানসভাও জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankar) বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা সূত্রে খবর, আসছে বাজেট অধিবেশনেই ধনখড়ের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা হতে পারে।
তৃণমূল আক্রমণের তীব্রতা উত্তরোত্তর বাড়িয়ে চললেও থেমে নেই রাজ্যপালও। শুক্রবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধেছেন তিনি। বুধবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) জানিয়েছিলেন, “এবার থেকে রাজ্যপাল বিধানসভায় আসতে চাইলে কারণ জানতে চাইব।” এদিন তার জবাবে ধনখড় লেখেন, বিধানসভার অধ্যক্ষের বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক ও অসাংবিধানিক।” ধনখড়ের দাবি, বিধানসভায় কখন যাবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার আছে তাঁর৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নৈতিক দায়িত্ব পালন করছেন না বলেও ফের অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। তাঁকে পালটা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলও। যার প্রত্যুত্তরে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের (Sukhendu Sekhar Roy) কটাক্ষ, দিল্লির নেতাদের নির্দেশে রাজ্যপাল নিজেকে হাস্যকর করে তুলছেন। অন্যদিকে, ধনখড়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সংবিধান দিবস বিধানসভায় এসে অধ্যক্ষ ও শাসকদলের বিরুদ্ধে কার্যত কামান দাগেন সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা সহ একাধিক ইস্যুতে সরব হন। রাজ্যপালের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। তিনি জানান, এবার রাজ্যপাল বিধানসভায় আসতে চাইলে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলবেন। বৃহস্পতিবার স্পিকারের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি লিখেছেন, রাজ্য বিধানসভার (West Bengal Assembly) অধ্যক্ষের বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক ও অসাংবিধানিক। সংবিধানের ১৬৮ ধারা অনুযায়ী দেশের বিধানসভাগুলি অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাজ্যপাল সে কথা স্মরণ করিয়ে অধ্যক্ষের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন রাখা হয় রাজভবনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আগে থেকে জানানোর পরও বিধানসভার প্রবেশপথ কেন বন্ধ ছিল। পরের বছর ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালের ভাষণ কেন ব্ল্যাক আউট করা হয়েছিল-সহ বেশ কিছু প্রশ্ন রাখে রাজভবন।
এরপরই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা যায় কিনা তা নিয়ে চর্চা শুরু হয় বিধানসভার অন্দরে। ডেপুটি মুখ্য সচেতক তাপস রায় জানান, বিধানসভার কাজকর্মে রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করছেন। সংবিধানে বিধানসভা ও রাজ্যপালের অধিকার স্পষ্ট করা রয়েছে। তিনি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন বলে অভিযোগ তাপস রায়ের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপাল দিল্লির প্রভুদের নির্দেশে রাজ্যে অচলাবস্থা তৈরি করতে এসেছেন। প্রশাসন থেকে বিধানসভা সব জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। তাঁর দাবি, স্পিকার সাংবিধানিক পদ। তাঁর এক্তিয়ারে আছে, স্পিকার জানতে চাইতে পারেন৷ রাজ্যপাল অপমান করছেন। প্রত্যক্ষ কোনও ভূমিকা রাজ্যপালের নেই৷ তিনি স্বয়ম্ভু নন৷ তিনি অতীব গুরুত্বপূর্ণ অকেজো মানুষ বলে কটাক্ষ করেন সুখেন্দুশেখর রায়। যদিও রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সংবিধানের ধারা উল্লেখ করে তিনি জানান, রাজ্যপাল বিধানসভা বা সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন। সংবিধান এই অধিকার রাজ্যপালকে দিয়েছে।