দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন করে সাজছে রাজ্যের পর্যটন শিল্প
করোনার পরপর তিনটি ঢেউয়ে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সব শিল্পই। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় আছে পর্যটন শিল্প। অন্যান্য রাজ্যের মতো বাংলার নিজস্ব পর্যটন শিল্পের পরিস্থিতিও যথেষ্ট খারাপ। কিন্তু তারই মধ্যে আশায় বুক বাঁধছেন পর্যটন সংস্থার কর্তারা। সাধারণ মানুষের তরফে যেভাবে বেড়ানোর জন্য খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে, তাতে মার্চ-এপ্রিল থেকেই ফের স্বাভাবিক হতে পারে এই শিল্প, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকার যেখানে রেস্তরাঁ বা শপিং মল চালু রাখার ব্যাপারে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে, সেখানে কেন পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে না, এই দাবি তুলেছিলেন পর্যটন সংস্থার কর্তারা। তাঁদের আশা, যেভাবে রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ স্তিমিত হয়ে আসছে, তাতে সরকার খুব তাড়াতাড়ি সেই সুযোগ করে দেবে। ইতিমধ্যেই তারাপীঠে ২৫ শতাংশ পর্যটক নিয়ে হোটেল খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাতে সাড়াও মিলছে বলে জানাচ্ছেন হোটেল মালিকরা।
পর্যটন সংস্থাগুলির অন্যতম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অব বেঙ্গলের সহ সভাপতি সমর ঘোষ বলেন, রাজ্যে স্কুল খোলার দাবি জোরালো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকার যদি স্কুল খোলার অনুমতি দেয়, তাহলে মার্চে পরীক্ষার কারণে পর্যটকদের একাংশ বেড়ানো থেকে পিছিয়ে আসতে পারেন। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদেরও আর্থিক বছরের শেষের দিকে কাজের চাপ থাকবে। তাই আমরা আশা করছি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এপ্রিল থেকেই একেবারে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে পর্যটন। তার আগে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে আমরা কিছুটা ভালো ব্যবসা করতে পারব বলে আশা করছি। তার মধ্যে অবশ্যই থাকবে দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান ও পর্যটন।
ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের সদস্য শঙ্কর বসু বলেন, আমরা পর্যটকদের থেকে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তা আবার শিল্পে আশার আলো আনছে। তৃতীয় ঢেউয়ের কারণে যে প্যাকেজ ট্যুরগুলি হয়নি, সেগুলি ফের চালু হচ্ছে। কাশ্মীর ও হিমাচলে যাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে সেই জমে থাকা ট্যুরগুলি আমরা মোটামুটি শেষ করতে চাই। কারণ ইতিমধ্যেই এপ্রিল-মে মাসের জন্য খোঁজখবর শুরু করছেন পর্যটকরা। যেহেতু এরাজ্যে এখনও পর্যটনে প্রশাসনিক বিধিনিষেধ জারি আছে, তাই আপাতত দোল উৎসবকেই পাখির চোখ করছেন শঙ্করবাবুরা। তিনি বলেন, আমাদের সংস্থা ‘দি সীমানা ছাড়িয়ে ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস’ ইতিমধ্যেই দোলকে সামনে রেখে ঝাড়গ্রাম, তাজপুর, ফলতা, ডুয়ার্স, সুন্দরবনের মতো জায়গায় প্যাকেজ চালু করেছে, সেগুলিতে দারুণ সাড়াও মিলছে। এখনই আমরা লাভের কথা ভাবছি না। তাই যতটা সম্ভব কম টাকায় পর্যটকদের নিয়ে যাচ্ছি। কারণ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখাই আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। শঙ্করবাবুর মতো বহু সংস্থাই আঞ্চলিক পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে সামনে রেখে নতুন করে পর্যটনের সলতে পাকানোর চেষ্টায় চালাচ্ছেন।