দীঘার মৎসজীবীদের ভাগ্য খুলল, জালে ৯০ লক্ষের ভোলা ভেটকি
শনিবার দীঘার সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের জালে ১২১টি বিভিন্ন সাইজের তেলিয়া ভোলা ধরা পড়ে। সেই মাছ প্রায় এক কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। দীঘা মোহনার ইতিহাসে একসঙ্গে এতগুলি তেলিয়া ভোলা ওঠার ঘটনা এর আগে ঘটেনি বলে মৎস্যজীবীদের দাবি। তাঁদের মতে, এত তেলিয়া ভোলা ওঠা লটারি লাগার শামিল। এদিন গভীর সমুদ্র থেকে তেলিয়া ভোলার ঝাঁক নিয়ে দীঘা মোহনায় আসে মা বিশ্বেশ্বরী ট্রলারটি। দীঘার মোহনায় ফিশ মার্কেটের মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে ১২১টি তেলিয়া ভোলা প্রায় ৯০লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। মাছ বিক্রি করেই ভাগ্য খুলে গেল ট্রলারের মালিক মনোরঞ্জন খাঁড়ার।
এদিন ট্রলার থেকে মোহনার ফিশ মার্কেটে মাছগুলি নিলামের জন্য নিয়ে আসা হয়। ধরা পড়া ভোলার এক-একটির ওজন ১০-১২কেজি থেকে শুরু করে ১৭-১৮কেজি পর্যন্ত বলে জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, বড় সাইজের এক টনের মতো তেলিয়া ভোলা ৬হাজার ৭৫০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, ছোট সাইজের ৭০০কেজির মতো ভোলা সাড়ে তিন হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দীঘার দু’টি মৎস্য ব্যবসায়ী সংস্থা মাছগুলি কিনে নেয়।
তার আগের দিন, শুক্রবারও একসঙ্গে ৩৩টি তেলিয়া ভোলা মাছ জালে উঠেছিল। সেই ভোলাগুলি সাড়ে ৩০লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। ডায়মণ্ডহারবার থেকে মাছগুলি দীঘা মোহনায় বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়।
দীঘা মোহনার মৎস্যজীবীরা বলেন, এই মাছগুলি সাধারণত গভীর সমুদ্রে থাকে। দলবদ্ধভাবে ঘোরাফেরা করার ফলে ঝাঁকে ঝাঁকে মৎস্যজীবীদের জালে উঠে আসে। এই মাছের পটকা বিশেষ ধরনের ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা। সবটা বিদেশে রপ্তানি করা হয়। তাই এই মাছের কদর অন্যান্য মাছের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, এর আগেও দীঘার সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের জালে প্রচুর তেলিয়া ভোলা ধরা পড়েছে। তবে ৩০-৪০টি কিংবা বড়জোর ৫০টি করে তেলিয়া ভোলা জালে উঠেছে। কিন্তু একসঙ্গে ১২১টি তেলিয়া ভোলা এর আগে ধরা পড়েছে কি না মনে করতে পারছি না।
উল্লেখ্য, এমনিতেই চলতি মরশুমে মৎস্যজীবীদের জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি। এবারও ইলিশের আকাল ছিল। তার মাঝে এই তেলিয়া ভোলাই মৎস্যজীবীদের ভাগ্য ফিরিয়ে দিচ্ছে।