ইউক্রেনে যুদ্ধের আবহ, পূর্ব ইউরোপে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত বাইডেনের
ইউক্রেন (Ukraine) ও রাশিয়ার মধ্যে চলা টানাপোড়েনের মধ্যে পূর্ব ইউরোপে ফৌজ পাঠানোর কথা ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইতিমধ্যে মুহূর্তের নির্দেশে ইউরোপে হাজির হওয়ার জন্য ৮ হাজার ৫০০ জনের একটি বাহিনী প্রস্তুত রেখেছে পেন্টাগন।
শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে পূর্ব ইউরোপে অল্প সংখ্যক হলেও সেনা মোতায়েন করবেন তিনি। যদিও, আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় সামরিক আধিকারিক মার্ক মাইলি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ হলে এই মুহূর্তে দুই তরফেরই অপূরণীয় ক্ষতি । বলে রাখা ভাল, ন্যাটো জোটের অন্তর্ভুক্ত নয় ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির যুদ্ধ বাঁধলে তাতে ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলির জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ওই অঞ্চলে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিম ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলি যেমন জার্মানি ও ইটালিতে কয়েক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। এবার রাশিয়াকে কড়া বার্তা দিয়ে সেই সংখ্যা আরও বাড়িয়ে তুলছে আমেরিকা।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ান সেনা মোতায়েন নিয়ে এখনই উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ করেছেন বিশ্বের তাবড় দেশের প্রশাসনকে। এ বিষয়ে আমেরিকার বিদেশ সচিব লয়েড অস্টিনও জানিয়েছেন, এখনও এ বিষয়ে কূটনৈতিক আলোচনার জায়গা রয়েছে। ফলে এখনই সংঘর্ষ আবশ্যক নয়। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল যে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ইউক্রেন দখল করবে রাশিয়া। যদিও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরেঁর সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন জানিয়েছেন, এরকম কোনও উদ্দেশ্য রাশিয়ার নেই। অন্য দিকে, শনিবারই সামরিক মহড়ার জন্য বেলারুশে পৌঁছল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মিত্রবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার উদ্দেশে চলবে এই মহড়া।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরেই ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে সেনার সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে রাশিয়া। ন্যাটো সামরিক জোটে কিয়েভকে যেন কোনওভাবেই জায়গা দেওয়া না হয় সেই দাবি জানিয়েছে মস্কো। পাশাপাশি, পূর্ব ইউরোপের একাধিক ঘাঁটি থেকে ফৌজ সরাতে হবে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটকে বলে দাবি করেছে তারা। বিশ্লেষকদের মতে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণে উদ্বিগ্ন মস্কো। এবার আমেরিকার নেতৃত্বে ওই সামরিক জোটে ইউক্রেন যোগ দিলে, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে এসে পড়বে বিরোধী শিবির। তাই প্রতিরক্ষার কৌশলগত কারণেই ইউক্রেন দখল করে পূর্ব ইউরোপ ও নিজেদের মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।