রেশন কার্ড ও আধার লিংক যাচাই ডিসেম্বরে ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে রাজ্যে
রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে গ্রাহকদের আধার নম্বর যাচাই করে খাদ্য দেওয়ার সংখ্যা রাজ্যে অনেকটাই বেড়েছে। গত অক্টোবর মাসে মোট বণ্টনের মাত্র ৩১ শতাংশ আধার যাচাইয়ের মাধ্যমে হয়েছিল। ডিসেম্বর মাসে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, আধার যাচাই আগামী দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে কোনও কারণে আধার যাচাই না হলেও যাতে প্রকৃত রেশন গ্রাহক খাদ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
খাদ্যদপ্তর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের গ্রাহকদের আধার যাচাই রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের গ্রাহকদের তুলনায় অনেকটা বেশি হচ্ছে। জাতীয় প্রকল্পের আওতায় থাকা তিন শ্রেণির রেশন গ্রাহকের ৮০ শতাংশের বেশি আধার যাচাই হয়েছে ডিসেম্বরে। কিন্তু রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের দুটি শ্রেণির রেশন গ্রাহকের ক্ষেত্রে এটা ৬০ শতাংশের আশপাশে রয়েছে। আবার রাজ্য প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটি জেলায় আধার যাচাই খুবই কম। এই জেলাগুলি হল মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর ও ঝাড়গ্রাম। মালদহ ও ঝাড়গ্রাম জেলায় রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের ২০ শতাংশেরও কম গ্রাহকের আধার যাচাই করে খাদ্য দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ও রাজ্য প্রকল্প মিলিয়ে রেশন গ্রাহকের আধার যাচাইয়ের নিরিখে সব থেকে পিছিয়ে আছে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ। দুই জেলায় প্রায় ৬৪ এবং ৬৭ শতাংশ গ্রাহকের আধার যাচাই করা হয়েছে। যেখানে কালিম্পং ও আসানসোলে এটি ৯০ শতাংশের বেশি।
পরিবারের সব রেশন গ্রাহকের আধার নম্বর সংযুক্ত করা হচ্ছে। তবে পরিবারের একজনের আধার নম্বর ই-পস মেশিনে যাচাই করে সবার খাদ্য দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু সমস্যা উঠে আসছে। অনেকের আধার নম্বর এখনও হয়নি। বিশেষত পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের আধার কার্ড না থাকলেও রেশন কার্ড করা হয়। আধার না থাকা গ্রাহকদের জন্য নমিনি ব্যবস্থা তিন মাসের জন্য খাদ্যদপ্তর চালু করেছে। একই রেশন দোকানে আধার যুক্ত কোনও গ্রাহক নমিনি হিসেবে আধার নেই এমন কারও হয়ে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য কোনও সদস্য নমিনি হতে পারবেন।
অনেক পরিবারে শুধু বয়স্ক ব্যক্তিরা আছেন। যাঁদের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আধার যাচাইয়ে সমস্যা হয়। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, ইন্টারনেট সমস্যা সহ বিভিন্ন কারণে বহু অনেক সময় আধার যাচাই করা যাচ্ছে না। এতে ডিলারদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এদিকে, খাদ্যদপ্তর থেকে আধার যাচাই করে চাল-গম দেওয়ার জন্য ডিলারদের নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, তিনবার চেষ্টা করে আধার যাচাই না হলে গ্রাহকের নথিভুক্ত মোবাইলে আসা ওটিপি ব্যবহার করে খাদ্য দেওয়া যাবে। মোবাইল নথিভুক্ত না থাকলে নম্বর লিখে নিয়ে খাদ্য দিতে বলা হয়েছে। বৈধ রেশন গ্রাহককে কোনও অবস্থাতেই খাদ্য ছাড়া যাতে ফিরে যেতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।