প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে সরানোর আর্জি সৌগত রায়ের
সোমবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে মঙ্গলবার সৌগত রায়। সোমবার সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ আর্জি জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। মঙ্গলবার লোকসভায় একই আর্জি মোদীর কাছে জানালেন সৌগত।
সোমবার কোবিন্দ সুদীপের কথার কোনও জবাব দেননি। মঙ্গলবার জবাব দিয়েছেন মোদী। তবে সেই জবাব নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে সৌগতর মনেও। মঙ্গলবার বাজেট ভাষণ শেষ হওয়ার পর মোদী যখন লোকসভার ভিতরে ঘুরে ঘুরে সমস্ত সাংসদকে নমস্কার জানাচ্ছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে সৌগত বলেন, ‘‘জগদীপ ধনখড়কে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদ থেকে সরান। উি নির্বাচিত সরকারকে বিরক্ত করছেন।’’
সৌগত নিজেই পরে জানান, জবাবে মোদী তাঁকে বলেন, ‘‘আপনি অবসর নেওয়ার পরেই হয়ে যাবে।’’ একই কথা সৌগত দ্বিতীয়বার বলেন। তখনও মোদী অবসর প্রসঙ্গ টানেন। সৌগত পরে বলেন, ‘‘উনি মজার ছলে বললেন কি না বুঝতে পারলাম না। তবে রাষ্ট্রপতি সুদীপকে জবাব দেননি। মোদী আমায় দিয়েছেন। তবে আমি অবসর নিলে আমাকেই রাজ্যপাল করতে চাইলেন কি না, সেটা বুঝতে পারলাম না।’’
মঙ্গলবার লোকসভায় এ দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি হলে মোদী বিরোধী দলের সাংসদদের আসনের দিকে এগিয়ে যান। সৌগতর মুখোমুখি হয়ে মোদীই আগে কুশলসংবাদ জানতে চান। সৌগতও কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর শরীর সম্পর্কে খোঁজ নেন। সৌগত বলেন, ‘‘আমায় দেখেই ‘দাদা কেমন আছেন?’ বলেন মোদী। আমি ওঁর শরীর কেমন, জানতে চেয়ে বলি, তোমার শরীর কেমন? তুমি তো খুব মেহনত করছ। জবাবে মোদী বলেন, ‘সে তো করতেই হবে’। এর পরে একেবারে ডানদিকে বসা কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর কাছে যান মোদী। অধীরের সঙ্গে কিছু কথাবার্তার পরে যখন ফিরে আসছেন তখন আমি ফের কথা বলি।’’
ঠিক কী বলেছেন তখন? সৌগত বলেন, ‘‘আমি তখন বলি, আমাদের রাজ্যপালকে সরিয়ে দিন। উনি নির্বাচিত সরকারকে বিরক্ত করছেন। তখন মোদী বলেন, যখন আপনি অবসর নেবেন তখন হবে। দ্বিতীয় বার বলাতেও তিনি বলেন, যখন অবসর নেবেন তখন হবে।’’ মোদীর এই কথার অর্থ অবশ্য পুরোপুরি স্পষ্ট নয় সৌগতর কাছে। মোদী সৌগতর না ধনখড়ের অবসরের কথা বললেন! রয়েছে ধন্দ্ব।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই কলকাতায় তৃণমূলের দুই শীর্ষনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সী জানান, তাঁরা বিধানসভায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনবেন। প্রসঙ্গত, সোমবার সংসদের সেন্ট্রাল হল-এ সুদীপ রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর আর্জি জানানোর পর বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি রাজ্যপালকে টুইটারে ‘ব্লক’ করে দিয়েছেন। রাজ্যপালের বদলি চেয়ে অতীতে মমতা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন বলে জানান সোমবার। ধনখড়কে নিয়ে প্রচুর ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।
ধনখড় অবশ্য সোমবার রাতে টুইট করে জানান, মমতারে প্রতি ব্যক্তিগত স্তরে তাঁর শ্রদ্ধা অটুট। তবে তাতে যে কাজের রাজ বিশেষ হয়নি, তা তৃণমূলের মঙ্গলবারের বিভিন্ন পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট।